Monday, August 15, 2022

আমাদের পদক্ষেপ পরিবার আয়োজিত বিশেষ ইভেন্ট "স্বাধীনতা"



বহু রক্তক্ষয়ের পর স্বাধীনতা পেয়েছিলাম আমরা ৷ ঘটেছিল দেশ বিভাজন ৷ রাজনীতির পাশাখেলায় তারপর থেকে আমরা অর্থাৎ আম জনতা নানাভাবে পিষ্ট হতে হতে হয়তো আজ 'স্বাদহীন'ভাবে স্বাধীন রয়েছি ৷ এই স্বাধীনতা কতখানি পরাধীনতা থেকে মুক্তি আর কতখানি ক্ষমতার হস্তান্তর তা নিয়েও রয়ে গেছে বিতর্ক ৷ তবু আজকের দিনটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ৷ তাই এই দিনটাকে উদযাপন করতে দেশজুড়ে গৃহীত হচ্ছে নানা কর্মসূচি ৷*

*আমাদের পদক্ষেপ পরিবারের পক্ষ থেকে আজকের দিনে পরিবারের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা ৷ পূর্বঘোঘণা অনুযায়ী আজ আমাদের এই পরিবারের যৌথ দেওয়ালে আয়োজিত হবে বিশেষ ইভেন্ট— "স্বাধীনতা" ৷ ইতিমধ্যে আপনাদের পাঠানো লেখাগুলো আমরা একে একে পোস্ট করব এখানে ৷ সেই ধারাবাহিকতা যেন ক্ষুণ্ণ না হয়, সেজন্য ইভেন্ট চলাকালীন গ্রুপটি অনলি অ্যাডমিন করে রাখা হবে ৷ আপনাদের অনুরোধ, ধৈর্য রাখবেন ৷ সাথে থাকুন ৷*
----+++---
স্বাধীনতা- ১৩

ঋণ শোধ 

ডা. মধুমিতা ভট্টাচার্য


দেশের স্বাধীনতা এলো 

বিপ্লবীদের রক্ত ঝরা সংগ্রামে-

বিদেশী শক্তি বিদায় নিল

শত শত সংগ্রামীদের জীবনের দামে ।


বলত - সত্য,নিষ্টা,দেশপ্রেম

আছে কি এখন শাসকের কাজে?

খাদ্য,ব্স্ত্র,বাসস্থান

আছে কি সব দেশবাসীর মাঝে!


স্বাধীন দেশের নাগরিকের

এমন কেন হাল!

এত বছর পরেও কেন

সুশাসনের আকাল!


রক্ত ঝরা স্বাধীনতার-

এই কি মূল্যবোধ ?

কেমন করে করব মোরা 

শহীদদের ঋণ শোধ?

--------------- 

স্বাধীনতা- ১৪

স্বাধীনতা

অভিজিৎ দত্ত 


স্বাধীনতা তোমাকে প্রণাম 

তুমি ছাড়া জীবন 

মৃত মানুষের সমান। 


হে স্বাধীনতার রবি

তোমাকে অন্ধকারে নিয়ে যেতে 

চেয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী শক্তি

নিপীড়িত জনগণ 

বুঝলো যখন তোমার মর্ম 

ঝাঁপিয়ে পড়লো স্বাধীনতার জন্য। 

তবু দুঃখ হয় 

যখন দেখি স্বাধীন দেশগুলোর 

জনগণ অভুক্ত রয়। 

এই স্বাধীনতার জন্যই কী 

এতো লড়াই?


দেশের জনগণ 

যদি না থাকে ভালো 

তবে সেই স্বাধীনতার কী মূল্য?

আমাকে বুঝিয়ে বলো।

------------------

স্বাধীনতা- ১৫

স্বাধীনতা র ৭৫ বছরের আমরা 

সত্যেন্দ্রনাথ পাইন। 


   স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে 

       কে বাঁচিতে চায়

   দাসত্ব শৃংখল বলো কে পরিবে পায় হে 

       কে পরিবে পায়!? 

 ৭৫ বছর হলো আমরা বৃটিশ শাসনের থেকে মুক্তি পেয়েছি। যার নাম দিয়েছি স্বাধীনতা। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট রাত ১২ টার সময় থেকে আমরা স্ব স্ব  সরকারের অনুশাসনের মধ্যে নিজস্ব সংবিধানের অধীনে আছি। যে সংবিধান তৈরি করেছেন ডঃ বি আর আম্বেদকর নামে আমাদের দেশেরই এক বিশিষ্ট ব্যক্তি। তারপর যদিও বেশ কিছু বছর আমরা কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশ হিসেবে পরিচিত ছিলাম! বৃটিশ সরকারের অনুমতি ব্যতীত আমরা কিছুই করতে পারতাম না। সেটি এখন আর নেই যদিও। পি এল ৪৮০ চুক্তিও আমরা বর্জন করতে পেরেছি-- মাননীয়া প্রয়াত  প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকেই।  এখন আমরা অর্থনৈতিক ভাবেও স্বাধীন। 

   কিন্তু কথা হলো ৭৫ বছরের এই স্বাধীনতা কি আমাদের যথেষ্ট দিতে পেরেছে! উত্তর বোধহয় না ই হবে। আমরা সুদীর্ঘ সংবিধান তৈরি করেও শুনেছি-- Indian Constitution is nothing but a big cypher.   এক বিশিষ্ট সমালোচক বলেছেন। আমাদের সংবিধান পড়লে জানতে পারি-- বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার কিছু ধার নিয়ে রচনা করেছি। আমেরিকার মতো রাষ্ট্রপতি রেখেছি( ক্ষমতাহীন), ব্রিটিশ পার্লামেন্ট আদলে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা তৈরি করেছি। আমরা যার নাম দিয়েছি পার্লামেন্ট ( নিম্নতর কক্ষ) এবং রাজ্যসভা ( উচ্চতর কক্ষ) । এছাড়াও অনেক কিছুই আমরা অন্য দেশের বিভিন্ন ধরনের জিনিস নকল করেছি। যার ফলে সংবিধান বিশাল বপু নিয়ে হাজির হলেও অনেকটাই নিশ্চিত হয়নি।  তাই  অনেকে সমালোচক   এর বিরুদ্ধেই বলেছেন-- ।  এছাড়াও আমরা খাঁচায় বন্দী পাখির মতো এখন আছি। আমরা কি প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছি! আমরা না পেরেছি নিজের মতো কিছু করতে, না পেরেছি নিজস্বতা বজায় রাখার পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা পেয়ে কিছু করতে।

-------------------

স্বাধীনতা- ১৬

স্বাধীনতার অমৃত

নবকুমার দাস


কথা ছিল আজাদির অমৃত পৌঁছে যাবে দেশের প্রতিটি কোনায়। 


যা ঘটেছে তা আপনি ও আমি ভালোই জানি । 

ফোঁটা ফোঁটা উন্নয়ন এবং বিকাশের বিমোহিত মন্ত্র চারিয়ে যাচ্ছে শিকড়ের আরো গভীরে। 


কী বাণী দিয়েছেন বাওয়া!

দেবতা ও অপদেবতায় জমে উঠেছে খেলা । 

হর কোনে মে ।

ওহ্ লাভলি, কী অপার মহিমা !

গরলের বাষ্প মেঘ থরে থরে জমে উঠেছে উহাদের ঘরে। 



রহিমুদ্দি মিঞা আর রামা কৈবর্ত লড়ে খাবে খুঁদকুঁড়ো

ইহাই কৌটিল্য বচন।

মেরে ফাঁক করে যাক - উহারা। 

ইহা উহাদের নির্বাচনগত অধিকার।  

তুমি বাপ , মহা পাপ উচ্ছিষ্টভোগী আম জনতা 

কুত্তার লেজের ডগায় চুলের উপর   এটুঁলি ।

ঢুলু ঢুলু চোখে ছানি, তবু তুমি খোঁজ নাও লাল কিল্লার,চৌদ্দ পনের বিয়াল্লিশ তলার ! 


আমরা তো সব্বাই পবন নন্দন, লাঙ্গুলচৌষ্য মুখপোড়া !


উহারা রামচন্দ্র,আকবর বাদশা,দয়ার সাগর ! 


হে মহান ফুয়েরার! জনগণের টুঁটি টিপে জনতার সেবা , আহা কি চমৎকার। 

চোপ , আদালত চলছে ! 

তন্ত্রমন্ত্রের জগমগানি ঘুম পাড়ানিয়া গান ।


তবুও কোথাও অমৃতকথা। অমর মানুষের স্মৃতিকথা , নতুন শপথ ।


উহাদের ত্রাস ও তাসের খেলার পরে আবারো আজাদি। সাচ্চা ই সামনা। 

গেট রেডি সহনাগরিক। 

গেট লস্ট মহামহিম ।

আমরা খেটে খাওয়া আম আদমি 

আমাদের সরল স্বপ্ন, রোটি মকান কাপড়ার লড়াই।  

বিমূর্ত ফ্যাসিবাদের মুর্তির সিমবায়োটিক মসিহার তলপেটের  নীচে দমাদ্দম মস্ত কালান্দর ক্যাল ...

হতচ্ছাড়ার পাতে বিছুটি পাতার ঝোল আর  ...


থাক সেই সব কথা, 

এখন গাওয়া যাক "মুক্তির মন্দির সোপান তলে ... " ইত্যাদি ইত্যাদি

এবং  "মা তুঝে সালাম ..."

-------------------

স্বাধীনতা- ১৭

স্বাধীনতা মানে কি

রোকিয়া


মাগো স্বাধীনতা মানে কি?

জাতীয় পতাকা উড়িয়ে শুধু মিষ্টি খাওয়া

ঐ আকাশে উড়ছে তিন রাঙা পতাকা;

খিদের চোটে এখনো আমার পেট ব্যাথা

রোদ ঝড় বৃষ্টিতে ঘুম আসে না ...

খাতা-কলম হারিয়ে আমি

হয়েছি ফুটপাতের হকার বালা,

এটাকে কি বলে পূর্ণ স্বাধীনতা।


মাগো স্বাধীনতা মানে কি?

জাতীয় পতাকা উড়িয়ে শুধু মিষ্টি খাওয়া

ঐ আকাশে উড়ছে তিন রাঙা পতাকা;

খিদের চোটে এখনো আমার পেট ব্যাথা

রোদ ঝড় বৃষ্টিতে ঘুম আসে না ...

খাতা-কলম হারিয়ে আমি

হয়েছি ফুটপাতের হাকার বালা,

এটাকে কি বলে পূর্ণ স্বাধীনতা।


মাগো তোমার বুকে এখনো রক্ত নদী বয়ে চলে 

হাজারো যুবক প্রাণ বলি দেয় কারনে অকারনে,

তোমার মেয়ের পায়ে শিকল বেড়ি বাঁধা

তালাবদ্ধ ওই অন্ধকার ঘরে ...;

মাগো এটাই কি স্বাধীনতার পূর্ণ মানে।


ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনি এক টুকরো রুটি

হাসপাতালে করছি আমরা লুটোপুটি,

রক্তে রাঙা স্বাধীন ভারত

তবুও আমরা অসুস্থ হলে রক্ত মেলেনা;

দারিদ্র অনাহার লাঞ্ছিত বঞ্চিত

করছে আমায় স্বাধীন সমাজ,

অর্থ আর পাওয়ারের উপর বসে করছে আয়েশ

অন্নবস্ত্র শিক্ষা ছিনিয়ে নিয়ে

স্বাধীনতার জাতীয় পতাকা তোলে।


মাগো স্বাধীনতা মানে কি?

এখনো এক ঝাঁক পায়রা খাঁচায় বন্দি

শহীদের রক্ত এখনো মলিন হয়নি,

এখনো ল্যাম্পপোস্টের নিচে কিছু

আর্তনাদ ধিক্বার মারে আমি স্বাধীন নয় ....!

মূল্যায়নের বিশেষণ খাতায় বিচার করে দেখি

স্বাধীনতার পূর্ণ মানে এখনো আমরা পাইনি।


মাগো তোমার বুকে এখনো রক্ত নদী বয়ে চলে 

হাজারো যুবক প্রাণ বলি দেয় কারনে অকারনে,

তোমার মেয়ের পায়ে শিকল বেড়ি বাঁধা

তালাবদ্ধ ওই অন্ধকার ঘরে ...;

মাগো এটাই কি স্বাধীনতার পূর্ণ মানে।


ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনি এক টুকরো রুটি

হাসপাতালে করছি আমরা লুটোপুটি,

রক্তে রাঙা স্বাধীন ভারত

তবুও আমরা অসুস্থ হলে রক্ত মেলেনা;

দারিদ্র অনাহার লাঞ্ছিত বঞ্চিত 

করছে 


এটাই কি স্বাধীনতা ?

-----------------------

স্বাধীনতা- ১৮

স্বাধীনতার মানে

আর্যতীর্থ


সকাল থেকে খুঁজে চলেছি স্বাধীনতার মানে 

যেটা আমার মেয়েরা জানে

আর যেটা জানেন আমার বাবা মা কাকা 

দুটোর মধ্যে  ফারাক থাকা

স্বাভাবিক সেটা আমিও জানি

কিন্তু এটা কিভাবে মানি

একই কথা অর্ধ শতাব্দীর ব্যবধানে 

অন্য রকম অর্থ বয়ে আনে?

আমার বাবার জন্ম স্বাধীনতার ঠিক আগে ওপার বাংলায়

দেশভাগে সব হারানো তার স্মৃতির পাতায় পাতায় 

হঠাৎ নেতাদের খেয়ালে বেমালুম গায়েব ভিটেমাটিটাই 

স্বাধীনতা মানে তাঁর কাছে সব হারিয়ে মাটি খোঁজার লড়াই 

তাঁর কাছে শুনেছি বিপ্লবী দের গল্প 

ছোটবেলার থেকেই তাই অল্পসল্প

জানি দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ।

অদৃষ্টের করুণ পরিহাস 

মেয়েদের কাছে এসব মহামানব শুধু স্টেশন পাতাল রেলে

বা শহরের কোনো এলেবেলে 

জায়গায়  কাকের বিষ্ঠা ময় মূর্তি 

স্বাধীনতা দিবস মানে তাদের কাছে ফূর্তি 

ছুটির দিনে , বড় জোর তেরঙ্গার ছবি ফেসবুকে

দেশভক্তির চিহ্ন কিছু পাই না খুঁজে  চোখে মুখে 

হঠাৎ সেদিন সবাই মিলে চোখ টিভিতে 

উত্তরটা পেয়ে গেলাম আচম্বিতে।

শাহরুখের খুব চেনা বই বলিয়ুডি মশলা দেওয়া 

বিলেতবাসী ছেলে হঠাৎ জাতীয় গীত ধরল গাওয়া 

মেয়েরা আমার সটান সোজা উঠে দাঁড়ায় সোফার  থেকে

গর্বিত বাপ আড়াল থেকে দেশপ্রেমের চিহ্ন দেখে ...

--------------------

স্বাধীনতা- ১৯

স্বাধীনতা 

 দীননাথ চক্রবর্তী 


কবর খোঁড়ে কিছু লোক 

নিক্তি সময় 

গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা 

বছর বছর 

ফি বছর 

আতস বাজি 

উৎসবে ।

মাতৃপূজা

তবু ,..


স্বাধীনতা কবর এখন 

বিস্মৃতি 

ঘুম পাড়ানি গল্প 

প্রতিবাদ 

শাশ্বত 

ভোরের সূর্য 

মা বোলতো।


হারিয়ে যাওয়া সেই গল্পটা 

বর্গী হানা

বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে 

ক্ষুধাতুর ক্ষুদিরাম

বৃদ্ধা বুড়ি 


আজ চারিদিকে কাঁটা তারের বেড়া

ঘরে দোরে 

মনে ভাবে 

বি এইচ কে

বেড়া দেবার জন্য বুকে বাঁধে বোমা 

যেন ঝুলন পূর্ণিমা 

আত্মবলিদান।


পাছে বেঘোরে .,.

ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে 

আমার স্বাধীনতা ।

------------

স্বাধীনতা- ২০

তবুও অপেক্ষায় আছি

স্বরূপ ভঞ্জ


এখনও তোমার প্রতীক্ষায়

                    পথ চেয়ে আছি স্বাধীনতা।

যেভাবে অনাহারী শিশু অপেক্ষায় থাকে

                                একপাত্র অন্নের,

অর্ধনগ্ন ভিখারি একটুকরো শীত-বস্ত্রের ,

কিম্বা ধর্ষিতা নারী একটা ন্যায় বিচারের

সেভাবে আমিও তোমার অপেক্ষায় আছি।


তবু তুমি পারদের স্পর্শকাতরতায় 

সমস্ত আকাঙ্ক্ষাগুলো উপেক্ষা করে যাও।


তাই বুঝি আজ‌ও 

                    রক্তাক্ত হয় সত্যের কন্ঠ ,

বাতাস ভারী হয় বারুদ গন্ধে,

কায়েমি স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করে প্রবঞ্চক স্বৈরাচারী,

স্ট্যাচু অব লিবার্টির উঁচু মাথার ওপর

জমাট বাঁধে নিকষ কালো বিষবাষ্প,

মৃত্যুর কারবার করে পাপাত্মা প্রহরণধারী !


কবে তুমি আসবে স্বাধীনতা!

কবে তোমার ভিজবে মন!

শেষ রাতের বর্ষণের মতো সিক্ত করবে

জ্যৈষ্ঠের চাতক-তুল্য অপেক্ষারত

                          তৃষিত মানবাত্মাকে!

কবে আবার বিবশ, দিশাহীন, অবোধ মানব

জাগ্রত হবে নতুন চেতনায় ,

আলোক প্রতিভাসিত প্রভাতের মতো!


                                      কবে ... !

-----------------

স্বাধীনতা-২১

এ কেমন স্বাধীনতা

শান্তি দাস


স্বাধীনতা এসেছিল তবুও স্বাধীনতা কই, 

আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক মোরা স্বাধীন নই। 

আমরা স্বাধীন হয়েছি ইংরেজদের হাত থেকে, 

কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছি কি! রয়েছি প্রাচীন যুগের যাঁতাকলে। 


ভগৎ সিং আর বাঘা যতীন প্রাণটা দিলো দেশের কাজে, 

তবুও মেয়েরা পেল না স্বাধীনতা রয়ে গেল শৃঙ্খলার বেড়াজালে। 

তবুও বলি আমরা আছি আমরা স্বাধীন, ভারতবর্ষ আমার দেশ, 

ভারত স্বাধীন একটি দেশ, নয়তো পর বশ। 


শত শত বীর যুদ্ধ করে শহীদ হয় ফাঁসির দড়িতে ঝুলে, 

তাই আমরা স্বাধীন হয়েছি, আজ তবুও কেন রক্ত ঝড়ে এই মুলে।

স্বাধীনতা যদি বাঁচার লড়াই কেন, কেন তবে খেতে না পেয়ে বিনা চিকিৎসায়, 

স্বাধীন বলে বেড়াই তবুও কেন স্বাধীন নাগরিকের প্রাণ যায়। 


ধুকছে বেকার দল ধুকছে শ্রমিক পাশাপাশি চাষীর দল, 

তবুও কেন কান্না চেপে সয়ে চলছে ছল। 

স্বাধীনতা এসেছে ধনীদের জন্য গরীব রিকশা ওয়ালাদের নয়, 

স্বাধীনতা আজ পরিহাস বেকার যুবক যুবতীরা হাঁসফাঁসে রয়। 


স্বাধীন মানেই তো অন্ন বস্ত্র বাসস্থান কর্মের অধিকার পায়, 

স্বাধীন দেশে থেকে ও কেন দেখি বেকারত্বের হাহাকার। 

আজ ও আছি আমরা সংস্কারে যতই বড়াই করি আর স্বপ্ন দেখি , 

কলঙ্কের নিশানা নিয়ে আমরা স্বাধীন ভারতবর্ষের বলতে থাকি।

------------

স্বাধীনতা- ২২

স্বাধীনতা স্বাধীনতা

অসীম দাস 


স্বাধীনতা নয় কুঁড়ি ঝরে পড়া পতাকার পতপত 

স্বাধীনতা মানে মানব বিমানে শান্তির পারাবত ।


স্বাধীনতা নয় বৎসরান্তে কবিতা লেখার ধুম 

স্বাধীনতা মানে সক্রেটিসের হেমলক দানে ঘুম !


স্বাধীনতা নয় কুচকাওয়াজ আর ভাষণের ঝনঝনা

স্বাধীনতা মানে অন্যায় হলে কিছুতেই মানব না ।


স্বাধীনতা নয় দলবদলের ঘোলা পথে লেনদেন 

স্বাধীনতা মানে সচল শিক্ষা সকলের হাতে পেন ।


স্বাধীনতা নয় পুনরাবৃত্তি সংখ্যা গুরুর জয় 

স্বাধীনতা মানে মুক্তমনার  বৃদ্ধিতে বরাভয়  ।


স্বাধীনতা নয় তোষণ দূষণে অভিমত চুপচাপ 

স্বাধীনতা মানে অশিক্ষা নয় , কুশিক্ষা অভিশাপ !


স্বাধীনতা নয় দেশের কিংবা জাতির মুক্তাকাশ 

স্বাধীনতা মানে বিশ্বমানব রবীন্দ্রনাথ শ্বাস ।

----------------------

স্বাধীনতা- ২৩

সত্যিই কি স্বাধীন

বন্দনা কুন্ডু


আঘাতগুলো চোরাস্রোত আর চোখের জলে ডুবসাঁতার...

কি জানি কবে অন্ত হবে ? মিলবে শহর রূপকথার!


জোনাকগুলো পথ চেনাবে,অন্ধকারেও নিয়ন আলো...

বল্ না কবে মন্দ ভুলে জগৎ হবে শুধুই ভালো ?


জাতপাত আর বিভেদগুলো নিছক ক'টা শব্দ হবে...

শুনবো কবে, 'মানবতা' ধর্ম-নামের সংজ্ঞা হবে ?


উপচে পড়া ধনের রাশি, দীন-দুখিনীর কান্না মুছে...

দেখবো কবে, শূন্য পাতে পূর্ণ হয়ে পৌঁছে গেছে ?


দেখে আমজনতার নোনা ঘামে ফুটে ওঠা দীর্ঘশ্বাস...

আর বলবো কবে, সিংহাসনের গা ঘেঁষে সব চোরের বাস ?


শিক্ষিতরা যোগ্য হয়ে পিষবে পায়ে দুর্নীতিকে...

বাঁচবে কবে মাথা তুলে, বেকার নামের তকমা থেকে ?


সন্মানেরা ভরসা পাবে, দিন হোক বা রাতের বেলায়...

জানবো কবে, এ দেশেতে ধর্ষকেরা বিলুপ্তপ্রায় ?


আসবে কবে সুদিন এমন? মনে হবে জীবন রঙিন...

সকল হৃদয় জানান দেবে, দেশটা মোদের সত্যিই স্বাধীন।।

---------------------

স্বাধীনতা-২৪

              স্বাধীনতা

           অরবিন্দ সরকার

        

স্বাধীনতা মানে দেশভাগ, স্বাধীনতা মানে শহীদদের বৃথা লড়াই, হাত পেতে ভিক্ষা চুক্তির স্বাধীনতা।

গনতন্ত্রের পরাজয়- সীতারামের পরাজয় মানেই গান্ধীর পরাজয়, নেতাজির দেশছাড়া কূটনীতির খেলা।

লড়াই ক'রে যুদ্ধ ক'রে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা আসে! আর আমার দেশে বিলেতি  পরস্ত্রীর সঙ্গে মাখামাখিতে নেতা, স্বাধীনতা যোদ্ধা, দেশের কর্ণধার। কতো প্রাণের স্বাধীনতার নামে হলো বলিদান , তাঁরা আইনের চোখে  এখনও সন্ত্রাসবাদী। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বদলে দ্বিজাতি তত্ত্বে দেশ ভাগ, জাতিদাঙ্গা , রক্তপাতে দেহ বিনিময়! লাশ হ'য়ে আসে ও যায়। স্বাধীনতা কাঁদে পথে পথে এ নিয়ে নাই সংশয়।

রাতারাতি মাতামাতি- বিলেতি শত্রু মিত্র রূপে স্থান পায়। ভারতবাসী অসহায়, যে তিমিরে ছিল  আজও সেই তিমিরেই !তার চেয়েও বেশি আজ মানুষ করে হায় হায়। কাজী নজরুলের দেশাত্মবোধক উজ্জীবিত সঙ্গীত, নেতাজির দিল্লি চলো ধ্বনি, ক্ষুদিরামের আত্মত্যাগ,জালিওয়ানাবাগে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে রবিঠাকুরের নাইট উপাধি ত্যাগ, সব ধূলিসাৎ। মানুষ জানে স্বাধীনতা মানে প্রভাতফেরি ও একটি বিলেতি আবরণে মোড়া লজেঞ্চুষ। স্বাধীনতা মানে -নেতা মন্ত্রীদের ফুলে ফেঁপে ওঠে, প্রজারা তাদের নামে জয়গান গায়। ভিখারি বেশে, রুগ্ন শরীরে আজো গরীব রয়! তাঁরা  রাস্তায় ভিক্ষা চায়। সবার অট্টালিকা হলেও তাদের নাই ঠাঁই। আইনের অধিকার ধনীর, বিচারে গরীব পথ হাতড়ায়! বিলেতি কুত্তা আজও বেশভূষা আচরণে রয়েই গেল আর আপামর দেশি কুত্তা ক্যাউ ক্যাউ রবে মাথা খুঁড়ে খুঁড়ে পরাধীনতার ফাঁদে পড়েই রইলো। লালকেল্লা কেল্লাফতের মন্ত্র, শহীদ মিনারের মাথা নত, রাস্তার নাম, স্থান, বিলেতি কুকুরের নামে সংরক্ষিত। দেশীয় পোশাক আস্তাকুঁড়ে, বিলেতি পোষাকে সজ্জিত , বিলেতি হাবভাবে নেতা মন্ত্রী নিমজ্জিত।

স্বাধীনতা কেউ দেয়না, ছিনিয়ে নিতে হয়,বিশ্বে প্রতিভাত! আর আমাদের অনশন ও অহিংস পথে স্বাধীনতা রেখে ভূতেরা পালায় এটাই সত্য!!

---------------- 

No comments:

Post a Comment