Monday, August 15, 2022

আমাদের পদক্ষেপ পরিবার আয়োজিত বিশেষ ইভেন্ট "স্বাধীনতা"

 

বহু রক্তক্ষয়ের পর স্বাধীনতা পেয়েছিলাম আমরা ৷ ঘটেছিল দেশ বিভাজন ৷ রাজনীতির পাশাখেলায় তারপর থেকে আমরা অর্থাৎ আম জনতা নানাভাবে পিষ্ট হতে হতে হয়তো আজ 'স্বাদহীন'ভাবে স্বাধীন রয়েছি ৷ এই স্বাধীনতা কতখানি পরাধীনতা থেকে মুক্তি আর কতখানি ক্ষমতার হস্তান্তর তা নিয়েও রয়ে গেছে বিতর্ক ৷ তবু আজকের দিনটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ৷ তাই এই দিনটাকে উদযাপন করতে দেশজুড়ে গৃহীত হচ্ছে নানা কর্মসূচি ৷*

*আমাদের পদক্ষেপ পরিবারের পক্ষ থেকে আজকের দিনে পরিবারের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা ৷ পূর্বঘোঘণা অনুযায়ী আজ আমাদের এই পরিবারের যৌথ দেওয়ালে আয়োজিত হবে বিশেষ ইভেন্ট— "স্বাধীনতা" ৷ ইতিমধ্যে আপনাদের পাঠানো লেখাগুলো আমরা একে একে পোস্ট করব এখানে ৷ সেই ধারাবাহিকতা যেন ক্ষুণ্ণ না হয়, সেজন্য ইভেন্ট চলাকালীন গ্রুপটি অনলি অ্যাডমিন করে রাখা হবে ৷ আপনাদের অনুরোধ, ধৈর্য রাখবেন ৷ সাথে থাকুন ৷*

----+++---

স্বাধীনতা-৭৩

স্বাধীনতা না স্ব-অধীনতা ?

- রূপাঞ্জনা ভৌমিক

ছিয়াত্তরতম স্বাধীনতা দিবস। পঁচাত্তর বছর বাক্ স্বাধীনতা, কর্ম স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আমরা খেটে খেয়ে এসেছি। তবুও হিসেব মেলানো যায় না। বাস্তবতার আতস কাঁচে স্বচ্ছ ভাবে দেখি মনুষত্বের পরাধীনতা , মমতার পরাজয় আর দুর্ভাগার নীল আকাশ । প্রভাবশালীর নিছক ছেলে মানুষী হতদরিদ্রের কাছে একক আস্থা। নির্যাতিত আত্মারা ঘুমন্ত বিচারের নামতা গোনে। ভরসার সীমিত পরিসরে আজ ধোঁকা গুলো হাত মেলায়।

'আমার মুক্তি আলোয় আলোয়, এই আকাশে ...' । মনে দ্বিধা জাগে, সত্যি কি আমরা মুক্ত পাখি? ক্রমাগত আমাদের মুক্তির ইউফোনি ব্যথাতুর ক্যাকোফোনিতে হারিয়ে যায়। অবকাশের সাদা পাতায় ভুলবশত কালির শিশি উল্টিয়ে যায়। সমস্ত রং তখন ফিকে। চোখের সামনে ভাসে অমাবস্যার সদ্য শেষ করা একটি পোট্রেট ।


আমি স্বাধীনতার প্রচুর চড়াই উতরাই দেখেছি। দেখেছি ঠিক কেমনভাবে বিত্তবানের সুষম জীবনযাপনের স্বাধীনতা আর প্রতিধাপে নিঃস্বের এতটুকু মসৃণ পথের কাছে পরাধীনতা। আমি দেখেছি আর্থিক শক্তির অপচয়ের ‌স্বাধীনতা আর সমান্তরালে সেই স্বাচ্ছন্দের তৃষ্ণায় চাতক পাখির মতো মুখিয়ে থাকা কিছু মানুষেদের । দেখেছি বিবেকের দেহে আগুনের লেলিহানে মনুষত্ব ধুলিস্যাৎ হতে। দেখেছি স্পষ্টবাদীর মুখের উপর অদৃশ্য ব্ল্যাক‌ টেপ , যেন এটাই ‌তার ভবিতব্য।

এই স্বাধীনতা আমাকে প্রতারিত করে। নগ্ন করে সামাজিক কিছু রাক্ষসদের। এই আকাশে শুধুই মিশকালো ধোঁয়ার ফিনকি ওড়ে । তাকেই স্বাধীনতা ভেবে দেখি কখনো গেরুয়া, কখনো সাদা আর কখনো সবুজের রঙে‌।

--------------------------- 

স্বাধীনতা- ৭৪

স্বাধীনতা

কুণাল কান্তি দে

স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭৫ বছর পেরিয়ে  ৭৬ বর্ষে পদার্পণ  করে গর্বে আমাদের বুক ভরে যাচ্ছে, মন মুগ্ধতায় আবিষ্ট।দীর্ঘ  প্রায়  দুশো বছর  ব্রিটিশ শাসনের  অধীনে  আমাদের পূর্বপুরুষেরা  অনেক লাঞ্ছনা  গঞ্জনা, নির্যাতন সহ্য  করেছেন। ব্রিটিশরা আমাদের ন্যায্য অধিকারের দাবি বঞ্চিত করে রেখেছে । নিজেদের স্বার্থে আমাদের  খনিজ সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ ,কৃষিজ সম্পদ ,এমনকি মানব সম্পদ লুণ্ঠন  করে  সনাতন ভারতবর্ষের ঐশ্বর্যকে ম্লান করে রেখেছে।  যুগ যুগ ধরে অন্যায়ের প্রতিবাদে , গর্জে উঠেছে এদেশের তরুণ, যুবক দেশপ্রেমিক আবাল বৃদ্ধ বনিতার দল।  অনেক রক্ত ক্ষয়ের বিনিময়ে, জীবন বলিদানের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।  চতুর ইংরেজ  সাম্প্রদায়িকতাকে অবলম্বন করে আমাদের দেশকে দুর্বল করতে দুটি রাষ্ট্রের  জন্ম দিয়েছেন।  আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেলেও বহু বিষয়ে আমাদের দুর্বলতা ছিল। শিক্ষা , স্বাস্থ্য, অন্ন , বাসস্থান ,বিদ্যুৎ  , সড়ক , নারী মুক্তি, পরিবহন ইত্যাদি বিষয়ে অনেক ঘাটতি ছিল।  সনাতন ভারতবর্ষের ঐতিহ্য  ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ভারতকে    আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করতে হবে।  ভারতের একজন নাগরিকও যেন  অভুক্ত না থাকে।  দুশো বছরের পরাধীনতা থেকে স্বাধীন হয়ে , ভারত কৃষি , শিল্প, সাহিত্য , সংগীত  প্রযুক্তি, খেলাধূলায়  প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে।  বিশ্বের কাছে ভারত  বিশেষ সাফল্যের মাপকাঠি  ছুঁয়েছে।   বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতবর্ষ।  পৃথিবীতে ভারতের যোগ চর্চা  বিশেষ স্থান অর্জন করেছে।   ভারতের সংবিধান সংশোধন সকলের কাছে  গ্রহণযোগ্য হয়েছে।  জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর প্রথমদিকে রয়েছে।    মহাকাশ গবেষণায় ভারত বিশেষ স্থান অর্জন করেছে। বিচার ব্যাবস্থায় যথেষ্ট পরিণত।  গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ায় ভারত  সুনামের সঙ্গে পৃথিবীতে  মর্যাদা পেয়েছে। সব সমস্যার সমাধান হয়েছে এই কথা বলার সময় আসেনি।  ৭৫ বছর পেরিয়েও অনেক সমস্যা থেকে গেছে।  যেদিন একজন মানুষও অভুক্ত থাকবে না, প্রতিটি নাগরিক অন্ন , বস্ত্র , বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানীয় জল,  বিদ্যুৎ  ,কৃষি, শিল্পের বিকাশ দেশকে স্থায়ীভাবে  ভবিষ্যতের দিশা দেখাবে সেদিন  " স্বাধীনতার " প্রকৃত স্বাদ  পাওয়া যাবে। সময়ের সঙ্গে  সঙ্গে  পৃথিবীর পরিবর্তন হচ্ছে, ভারতের পরিবর্তন সফল ভাবেই হচ্ছে।  প্রকৃত  জাতীয় শিক্ষায় নতুন প্রজন্ম লালিত হবে এই বিশ্বাস আমার আছে।  শরীরে অসুখ যেমন দেখা দেয়, সমাজেরও অসুখ,  দুর্নীতি  দেখা দেয়। এই অসুখ দূর করার জন্য রাষ্ট্রের কর্ণধারদের কড়া পদক্ষেপ  নিতে হবে। স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব  কোটি কোটি জনগণেরও।  একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে আমি গর্বিত । আজকের  শপথ হোক যে কোনো মূল্যে  দেশমাতাকে  রক্ষা করবো। ভারত মাতা কি জয়

------------------ 

স্বাধীনতা-৭৫

 সাইড এফেক্ট

আর্যতীর্থ


এই যে কিছু লোক মানেনা, নেতা রাজার প্রকার বিশেষ,

এই যে কিছু লোক জানেনা, ধর্ম আগে তার পরে দেশ,

নানান রকম ফেক ফরওয়ার্ড এই যে কজন যাচাই করে,

তকমা পেয়ে দেশদ্রোহীর দেশ বাঁচানোর জন্য লড়ে,

এই যে কিছু লোকের আজও প্রশ্ন করার আছে ডিফেক্ট,

এ সব বালাই আর কিছু না, স্বাধীনতার সাইড এফেক্ট।


এই যে চরম ক্ষমতাতেও বেশ করেছি যায় না বলা,

শাসক হবার জন্য লাগে ভোটে জেতার মোহন ছলা,

ভেদের বিষে মন ডুবিয়েও এই যে মুখে সবাই সমান,

এই যে আজও সংবিধানই নাগরিকের খাস দারোয়ান,

 ভালোবাসা যায় না মারা ভোটের লোভে জেহাদ বলে

এই যে দেশে সবার মগজ আই টি সেলের নয় দখলে,

মারীর মাঝেও রাজপ্রাসাদে এই যে মনে করে অ্যাফেক্ট

এই সব দোষ আর কিছু নয়,  স্বাধীনতার সাইড এফেক্ট। 


এই যে আজও শুনলে ভারত বুকের কাছে দলা পাকায়,

আগামীকাল স্বপ্ন আঁকে তিনটে রঙের ওই পতাকায়

এই যে এত দুর্নীতিতেও রাখছি আশা আসবে সুদিন,

দূর-নীতি কেউ করবে ভালো, বর্তমানের শোধ হবে ঋণ,

এই যে অসীম অনিশ্চয়েও ভাবছি আবার সব হবে ঠিক

ধর্মবিহীন জাতবিয়োগে সত্যি সমান সব নাগরিক,

একদিন ঠিক স্পষ্ট হবে দেশখেকোদের হাইড এফেক্ট,

এ রোগখানার চিকিৎসা নেই, স্বাধীনতার সাইড এফেক্ট।


অন্ধকারের মধ্যে পাওয়া লাইটহাউজের গাইড এফেক্ট..

---------------------- 

স্বাধীনতা-৭৬

স্বাধীনতা, তুমি 

 শিবেশ মুখোপাধ্যায় 


"তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি  তোমাদের স্বাধীনতা এনে দেবো।"

---------- রক্তদান শিবির দিকে দিকে।  কিন্তু কোথায় স্বাধীনতা? 

সেই, আগুনে পুড়ে শুদ্ধ হয়ে,শুদ্ধচিত্তে চাওয়া আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতা। 


আজকের রক্তদান কোন স্বাধীনতার জন্য? এ-তো এক উৎসব, রক্তদান উৎসব। 

দিকে দিকে আওয়াজ, স্লোগান 

রক্তদান মহৎদান, জীবন দান।

আপনার রক্তে বাঁচবে অন্যের  প্রাণ। 


আজ প্রাণ বাঁচে কই, বাঁচে কই মান। কীসের তরে বলি দেয়েছি মোরা শত সহস্র প্রাণ? 

বিনয়- বাদল- দিনেশ, ক্ষুদিরাম 

মাতঙ্গিনী, ঝাসীর রাণী 

অকালে যারা ঝরে গেল।

দেশের তরে সঁপে দিল প্রাণ-

কে মনে রেখেছে তাদের অবদান? 


ঘুষখোর আর দুর্নীতিগ্রস্থরা আজ সমাজের উচ্চস্তরে। উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত আজ ক্ষমতা লোভী যক্ষরা। বিপুল সম্পত্তি আর বিপুল বপুতে পাইয়াছে শীর্ষে উঠিবার সিঁড়ি। নিম্নে আমরা বঞ্চিতের দল। 


কোথায় স্বাধীনতা?  কীসের স্বাধীনতা? ৭৫ বছরের এই মিথ্যে জৌলুস বয়ে বেড়ায় ভারতবাসী। উৎসব হিসেবে পালন করে। একটি বিশেষ দিন। কোথায় স্বপ্নের ভারতবর্ষ।যে মাটিতে সোনা ফলতো। আজ তা মজুত হয় ক্ষমতাসীন অর্থ লোলুপ মহারথীর ঘরে। স্বাধীনতার ৭৪ বছর পরেও আজ তাই 'খাদ্য চাই' 'বস্ত্র চাই,' 'চাকরি চাই 'এর হাহাকার ঘরে ঘরে। আজ আর কেউ লড়ে না মরে না দেশের তরে। 


দেশ তাই আজ আর "মা" নয়। 

দেশ এখন একটা ভৌগোলিক সীমানা মাত্র। স্বাধীনতার নামে ভাষণ আর তীব্রস্বরে বক্সে দেশাত্মবোধক সংগীতের সুরমূর্ছনা...

শুধু  উৎসব পালন।

-------------------- 

স্বাধীনতা- ৭৭

আমার স্বাধীনতা

   মনোজ কুমার রায়


       আমার স্বাধীনতা ঐ রাজপথে পড়ে আছে দীর্ঘমেয়াদি পথ ধরে,

      আমার স্বাধীনতা বিবেকের কাছে হার মেনে আস্তাবলে পড়ে থাকে।

    এ দেশের কোটি কোটি জনতা নিঃস্বার্থ মনে ছুটেছিল স্বাধীনতার সিক্ত সন্ধানে,

    বৃটিশ শাসকদের লেলিয়ে দেওয়া দাপট সংগ্রামী আকাশে বিলীন হয়ে যায়।

     আমার স্বাধীনতা শুধু বাক্স বন্দী ভোট নয়,আমার স্বাধীনতা গনতন্ত্রের পরিচয়।

     স্বদেশের স্বাধীনতা হয়,আমার ভীতির উদয়!

স্বাধীনতা পেয়েছি বটে, কিন্তু এই সহজ সরল মানুষগুলোকে আর যে খুঁজে পাই নি,তাই আমার স্বাধীনতা খুঁজি বধিরতা ও বিক্ষুব্ধদের কাঠগড়ায়।

   

  আমার স্বাধীনতা আজ বিবস্ত্র, উন্মাদ ও চলার পথে কাঁটা বিছানো,এক মুঠো আন্নের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষে করতে হয়। ওঁরা কি মানুষ নয়? প্রশ্ন আমার স্বাধীনতার।

আমি আমার স্বাধীনতার গৌরবান্বিত বোধ করছি,সবার কাছে মুখ ফুটে,স্বাধীনতা যে পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছে পঁচাত্তরে ।

আমার স্বাধীনতা চিৎকার করে বলছে, আমাকে বাঁচাও শোষণের হাত থেকে।

ওরা বলছে আমাকে আমার মত থাকতে দাও নিজেকে গুছিয়ে,

তুমি ভাব কিনা তোমার উত্তরসূরী লড়াই করে দেশ আজাদ করেছিল প্রতিনিয়ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।

আজ আমার স্বাধীনতা লুকিয়ে আছে নিরস্ত ভাগ্য দেবতার কাছে,

এখন ও চুপিচুপি আমার স্বাধীনতা উপভোগ করি আমার লাগানো গাছে।

অখন্ডিত দেশ হল খন্ডিত বিভেদের রাজনীতির হাত ধরে,

শত সহস্র তাজা প্রাণের আহুতি দিয়ে খুঁজে পেলাম আমার স্বাধীনতা কোন এক শুকিয়ে যাওয়া নদীর তীরে।

আমার স্বাধীনতা পথ খুঁজে অনাথ, উন্মাদ, বিকলাঙ্গ, ভিখারী আদি যাদের কে অনেকেই হেলা করে।

আমার স্বাধীনতা এখনও যন্ত্রণায় ছটফট করে, তবুও নিঃশ্বাস ফেলে মুক্ত হাওয়ায়।

জানি,আমি আছি, এখন ও তন্দ্রায়! ভোরের আকাশে ঊষার আলোয়, সন্ধ্যা  আসবে ঘনিয়ে কাছে  আকাশ ভরবে জোৎস্নায়।

------------------- 

স্বাধীনতা- ৭৮

স্বাধীন কিনা

আর্যতীর্থ


দেশ পড়েছে পঁচাত্তরে। 

ফোনে ফোনে প্রশ্ন ঘোরে, 

এই যে নাচা তা ধিন ধিনা,

 সত্যি এ দেশ স্বাধীন কিনা।


সত্যি বলতে, সন্দেহ হয়, 

চারদিকে যা জমেছে ভয়, 

সাংবিধানিক শব্দ মেনে নিন্দা করাও রাষ্ট্রদ্রোহ, 

 সামনে ভেবে পেছনে নেয় ধার্মিকতার অন্ধ মোহ, 

পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি পা দিচ্ছে মাথায় যোগ্যতারই, 

যখন তখন ঘটতে পারে জামিনবিহীন গেরেপ্তারি, 

জন্ম দেখেই ঠিক হয়ে যায় জীবনসাথীর ঝাড়াইবাছাই,

সত্যি বলতে , অনেক কাজেই খুব পরাধীন আমরা সবাই।


 তার মানে কি স্বাধীনই নই?

 যে সব জোয়াল দুই কাঁধে বই, 

এমন ভাবেই সেটার  ভারে বেঁকেছে শিরদাঁড়া,

 হুজুর বলেই কচলাবো হাত, কক্ষনো নই খাড়া? 

কে বেঁধেছে হাত পা বলো, মাথাই বা কার কেনা?

কে বলেছে ভাবছো যেটা করতে তা পারবে না?

 আজকে যদি করো তুমি ভিন্ন জাতে বিয়ে, 

কিংবা লেখো শাসক খারাপ মিডিয়াতে গিয়ে,

ঝামেলা যে হবে কিছু সেটা জানা কথা, 

স্রোতের বিপরীতে গেলে ঝাপটা খাওয়াই প্রথা, 

তাই বলে নয় করা সেটা এখন অসম্ভব,

 সংবিধানে অধিকারও দেওয়াই আছে সব,

 প্রশ্ন এটাই তুমি কি সেই ঝক্কি ঘাড়ে নেবে, 

নিজেই যদি বদল না চাও, লাভ কি তবে ভেবে?


 স্বাধীনতা বিশেষ্য নয়, ক্রিয়াপদের মতো,

 চলতে চাইলে অন্যদিকে মিলবে ঠিকই পথও।


  নিজের দোষটা দেশের ঘাড়ে দিও না অন্তত।

---------------------- 

স্বাধীনতা- ৭৯

ধৃতরাষ্ট্র

অসীম সেন


লোকটা জন্মান্ধ তবুও

এদিনটা এলেই সে নরম

পতাকার গায়ে হাত বুলোয়,

আর ভাবে, দেশটাও

বুঝি এরকম‌ই।


ভাগ্যিস সে দেখতে পায়না।।

------------------ 

স্বাধীনতা- ৮০

স্বাধীনতার মানে

রাজকুমার ঘোষ


প্রথম দৃশ্য

[আলোর দূত চ্যানেলের দুই রিপোর্টার নিজেদের মধ্যে কথা বলে নিচ্ছে আজকের স্বাধীনতা দিবসে তাদের চ্যানেলের লাইভ প্রোগ্রাম কিভাবে এগোবে। সাধারণ মানুষের মনে স্বাধীনতা দিবসে গুরুত্ব কতখানি।]  

রিপোর্টার-১ – 

আমাদের চ্যানেল আলোর দূত এর তরফ থেকে সকল দর্শকবৃন্দকে জানাই স্বাধীনতা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমাদের ভারতবর্ষ মানে বীর নেতাজির ভারতবর্ষ, দেশের প্রতি তাঁর আত্মত্যাগ এবং হাসিমুখে নিজের মাতৃভূমির জন্য প্রাণ বিসর্জন দেওয়া বীর বিপ্লবী শহিদ ক্ষুদিরাম বসুকে আজকের দিনে প্রণাম জানাই। এছাড়াও আরো অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর যোদ্ধাদের আত্ম বলিদানে ২০০ বছর ব্রিটিশদের হাতে বন্দী হয়ে থাকা মাতৃভূমিকে মুক্ত করেছেন৷ সেই মুক্তির আনন্দে আমরা দেশবাসীরা ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করছি। তাই আজকের দিনটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের দিন৷

রিপোর্টার-২ – 

একদম ঠিক। ১৫ই আগস্ট এর দিনেই আমরা ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান থেকে ইন্ডিয়ান হয়েছি। what is glorious day. আজকের দিনে আমরা চারপাশে দেশাত্মবোধক গান শুনতে পাচ্ছি, বিভিন্ন জায়গায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে। গর্বের সাথে তিরঙ্গা পতাকা উত্তোলন হচ্ছে৷ এসব দেখে আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। 

রিপোর্টার-১ -  

ঠিক আছে এবার তাহলে চলে আসি আমাদের আজকের অনুষ্ঠানের মূল বিষয়, স্বাধীনতা মানে কি? আজ আমরা লাইভ টিভিতে দেখতে চাই যে আমাদের প্রিয় দেশবাসী তথা ভারতবাসী, তাদের কাছে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব কতখানি। তাদের মুখেই জানতে চাই স্বাধীনতা মানে কি? 

রিপোর্টার-২ – 

আশা করি দর্শকবন্ধুরা আপনারা এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করবেন এবং সঙ্গে থাকবেন চ্যানেল আলোর দূত এর সাথে। 


দ্বিতীয় দৃশ্য

[তরুণ দুই রিপোর্টার যখন তাদের চ্যানেলে স্বাধীনতা দিবসে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন সেই নিয়ে লাইভ অনুষ্ঠান করা নিয়ে উৎসাহিত ঠিক সেই সময়ে শহরের এক পরিবারে বাবা-ছেলের কথোপকথন। বেলা ১০টা পর্যন্ত ছেলে ঘুমিয়ে আছে। বাবা বিরক্ত সহকারে ছেলের কাছে এসেছে।]  

বাবা- 

( নিজের সাথে কথা বলছে) কি হবে আজকালকার ছেলেদের, সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠেই না, রাত জেগে মোবাইলে কি যে করে কে জানে? ( ঘুমন্ত ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে) এই মুখপোড়া, আজকে আমাদের স্বাধীনতা দিবস। আজ অন্তত সকাল সকাল ওঠ। ছাদে যা, পতাকা উত্তোলন কর। পাশের বাড়ির নিলুকে দেখে শেখ। কিছু শেখ... (ছেলেকে আবার ধাক্কা দেয়) 

[একরাশ বিরক্তি নিয়ে ছেলে তার বাবাকে]  

ছেলে- 

ধুত্তর, নিকুচি করেছে। স্বাধীনতা দিবস তো আমার কি? আমাকে একটু স্বাধীনভাবে ঘুমোতে দাও প্লিজ। কানের সামনে বেকার ফ্যাচ ফ্যাচ করছ কেন? 

বাবা- 

কি বাঁদর রে! বাবার সাথে এইভাবে কেউ কথা বলে? 

ছেলে- 

না, বলবে না। ঘুমটা ভাঙিয়ে দিয়ে স্বাধীনতা ফুটাচ্ছে। যাও যাও বাজারে গিয়ে খাসির মাংস কিনে নিয়ে এসো, তাহলেই স্বাধীনতা বেশ জমে যাবে। হ্যাপি স্বাধীনতা দিবস! ইনজয় বাবা, ইনজয়!!

বাবা- 

ছি ছি ছি... কুলাঙ্গার একটা! আমার কপালেই এরকম একটা জুটলো! হায় ভগবান।


তৃতীয় দৃশ্য

[রিপোর্টার দুজন প্রথমেই গেল শহরের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মধ্যে। সেখানে দুই ছাত্রের সাথে সাক্ষাৎ হয়ে গেল। তারা এগিয়ে গেল ছাত্রদের কাছে।]  

রিপোর্টার-১- 

হ্যালো student's 

ছাত্র-১-  

হ্যালো বলুন

রিপোর্টার-১- 

তোমরা নিশ্চই জানো যে আজ স্বাধীনতা দিবস  

ছাত্র-১- 

কি দিবস? আপনি কে? আর আপনাকে বলেই কি হবে? 

রিপোর্টার-২- 

আমরা আলোর দূত চ্যানেল থেকে কভার করতে এসেছি। আজ স্বাধীনতা দিবস নিয়ে তোমাদের থেকে মতামত জানতে চাই? 

ছাত্র-২- 

ও আচ্ছা! তাই নাকি? চ্যানেল থেকে এসেছেন! ওয়েট ওয়েট, একটু চুলটা ঠিক করে নিই। (একটু ঠিক করে নিল নিজের চুল এবং পরণের স্কুল ড্রেস ঠিক ঠাক করে নিল)  হুম বলুন..কি যেন সাধারণ দিবস জিজ্ঞাসা করছিলেন? 

রিপোর্টার-১- 

আরে স্বাধীনতা দিবস মানে ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে। 

ছাত্র-১- 

ওই একই হলো। যা স্বাধীনতা, তাই সাধারণ। এই দিনে কি আমরা নাচবো নাকি গাইবো! 

রিপোর্টার-২- 

তোমাদের নাচতেও হবে না আর গাইতেও হবে না। স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব কি তোমাদের কাছে জানতে চাইছি। 

ছাত্র-২- 

স্বাধীনতা দিবস মানে ছুটি ছুটি আর ছুটি। মানে ফুল মস্তি। বন্ধুরা মিলে শুধু পার্টি হবে!  

রিপোর্টার-১- 

একি! তোমরা নিশ্চই শুনেছো, ১৯৪৭ সালে আজকের দিনে আমরা ভারতবাসী অত্যাচারী ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছি। কত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও তাদের প্রাণত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। সেই দিবস কি আমরা পালন করব না?  

ছাত্র-১- 

তাতে আমাদের কি? ওই সময় লড়াই করার দরকার ছিল তাই তারা লড়ে দেশকে স্বাধীন করেছিল। 

ছাত্র-২- 

আপাতত আমরা আমাদের ছুটির সময় কাটাই নিজেদের মতো করে। ফুল মস্তি করে। এসব বেকার প্রশ্ন করে আমাদের বোর করবেন না। আজ শুধু ইনজয় আর জমিয়ে খানাপিনা। 

রিপোর্টার-২- 

ও আচ্ছা আচ্ছা, বুঝলাম।

[দুই রিপোর্টার ছাত্রদের কথা শুনে ভীষণ হতাশ। সেখান থেকে তারা চলে গেল।]  


চতুর্থ দৃশ্য

[ঐ স্কুলেই আজ একটি ক্যুইজ কন্টেস্ট ইভেন্ট হবে। রিপোর্টার দুজন  এসেছে ইভেন্টের স্থানে। পারলে আজ তারা স্বাধীনতা দিবসে স্কুলের এই ক্যুইজ কন্টেস্ট অনুষ্ঠান কভার করবে। ইভেন্টের আগে তারা উপস্থিত তিনজন প্রতিযোগী (যাদের মধে দু'জন ছাত্র ও একজন ছাত্রী)কে আজকের এই বিশেষ দিনের মাহাত্ম্য কি জানতে চায়...]  

রিপোর্টার-১- 

আজ আলোক দূত চ্যানেলের তরফ থেকে আমরা এসেছি তোমাদের স্কুলের ক্যুইজ কন্টেস্ট অনুষ্ঠান কভার করতে। তবে তার আগে আমরা চ্যানেলের একটি লাইভ অনুষ্ঠানের জন্য তোমাদের কাছে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। 

ছাত্র-১- 

হ্যাঁ বলুন। 

রিপোর্টার-১- 

আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৪৭ সালে ১৫ই আগষ্ট আমাদের ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে। তোমরা নিশ্চই জানো। তা, প্রিয় Student's, তোমাদের কাছে প্রশ্ন, স্বাধীনতা মানে কি?

ছাত্র-১- 

ও আচ্ছা। আজকের দিনে ভারতবর্ষের সংবিধান অর্থাৎ Indian Constitution গঠন হয়েছিল।  

রিপোর্টার-২- 

বলো কি? (আঁতকে ওঠে এবং লজ্জিত হয়ে) আচ্ছা বলো, ভারতের জাতীর জনকের নাম কি? 

ছাত্রী- 

জওহরলাল নেহরু। (জবাব শুনে দু'জন রিপোর্টার মাথায় হাত দিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করে)

রিপোর্টার-১- 

তাহলে মহাত্মা গান্ধী কে ছিলেন? 

ছাত্র-২- 

আরে ওইতো আমাদের টাকার নোটের ওপর যার ছবি আছে। 

রিপোর্টার-২- 

হ্যাঁ, ঠিকই। উনি ভারতবর্ষের জন্য কি ছিলেন, সেটা নিশ্চই জানো তো? 

ছাত্রী- ওই তো, উনি টাকার মেসিন আবিস্কার করেছিলেন। সেইজন্যই তো নোটের ওপর ওনার ছবি। 

রিপোর্টার-১- 

ওকে, ওকে। বুঝে গিয়েছি, তোমরা কি পড়াশোনা করছো... (বিরক্ত প্রকাশ করে) সহজ সরল জ্ঞান তোমাদের একদমই নেই। ভীষণ লজ্জার। ছিঃ 

ছাত্র-১- 

ঠিক আছে। এবার এখান থেকে যান তো। বেশি জ্ঞান দেবেন না। নিজেদের কাজ করুন। 

[ভীষণ হতাশ হয়ে দুই তরুন রিপোর্টার সেখান থেকে বেরিয়ে আসে।]  


পঞ্চম দৃশ্য

[দুই রিপোর্টার স্কুল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় চলে আসে। দেখে একজন কিশোর রাস্তায় কানে হেড ফোন দিয়ে নাচতে নাচতে যাচ্ছে। রিপোর্টার দু'জন সেই কিশোরটির দিকে এগিয়ে যায়।]  

রিপোর্টার-১- 

ও ছেলে শুনছো...

কিশোর ছেলেটি – 

কে বাবা তুমি? দেখতে পাচ্ছো না আমি গান শুনছি। 

রিপোর্টার-১- 

আমরা আলোক দূত চ্যানেল এর তরফ থেকে আজ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে তোমাদের কাছে জানতে চাই, স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব তোমার কাছে কতটা? স্বাধীনতা মানে কি? 

কিশোর ছেলেটি – 

স্বাধীনতা দিবস মানে আজ হলি ডে। আমার কাছে রক এন্ড রোল এন্ড ডিসক উইথ মিউসিক... ইয়ে ইয়ে (নাচতে নাচতে) 

রিপোর্টার-২- 

একি ১৯৪৭ সালে আজকের দিনে আমাদের দেশ ভারতবর্ষ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। আজ সকল ভারতবাসীর কাছে একটি গর্বের দিন। জায়গায় জায়গায় ভারতের পতাকা উত্তোলন হচ্ছে। দেশাত্মবোধক গান হচ্ছে। 

কিশোর ছেলেটি- 

তো...! যারা করছে করছে, আমার কি? বেকার প্রশ্ন করে আমার ম্যুডটাই নষ্ট করে দিলেন। আমি আপাতত আপনাদের থেকে স্বাধীন হয়ে চাই। যান তো এখান থেকে... যত্তসব। 

[এরপর রিপোর্টারকে একরকম ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়]  

রিপোর্টার-১ – 

(রিপোর্টার-২ কে বলে) কেমন সব দেশবাসী আমরা। আমরা নিজেদের স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কত উদাসীন। ভীষণ খারাপ লাগছে বন্ধু। 

[এরপর একজন বয়স্ক ব্যক্তি, (যার একটি হাত নেই) সেখান দিয়ে হেঁটে যান। কিছু দূরেই এক হকার তার ঝোলার মধ্যে একটি কাগজের তিনরঙের পতাকা রাখতে যায় এবং সেটা রাস্তায় পড়ে যায়। বয়স্ক ব্যক্তিটি তৎক্ষনাৎ সেই পতাকাটি অন্য হাতে তুলে নিয়ে হকারের হাতে দিয়ে দেন।]   

বয়স্ক ব্যক্তি – 

জয় হিন্দ। (স্যালুট করে) 

হকার – 

জয় হিন্দ! (স্যালুট করে)

বয়স্ক ব্যক্তি – 

পরিস্থিতি যেমনই হোক, মা'কে সবসময় রক্ষা করবে।

[দুই রিপোর্টার ওই ব্যক্তিকে দেখে তার কাছে চলে আসে।] 

রিপোর্টার-২- 

আজ আমরা যেখানেই গিয়েছি। শুধুই হতাশ হয়েছি স্যার। আপনাকে দেখে ভীষণ ভালো লাগল। আজ স্বাধীনতা দিবসের দিনে আপনাকে দেখে মনে ভীষণ শান্তি পেলাম। 

রিপোর্টার-১- 

স্যার আজ আমরা আলোক দূত চ্যানেল থেকে রাস্তায় বেরিয়েছি। সকল সাধারণ মানুষের কাছে জানতে চাইছি, আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। এই স্বাধীনতার গুরুত্ব আপনার কাছে কতখানি? আপনার মতামত জানলে ভালো লাগবে। 

বয়স্ক ব্যক্তি – 

স্বাধীনতা মানে আমার মা'র মুক্তি, আমার মুক্তি, সমগ্র ভারতবাসীর মুক্তি। ১৯৪৭ সালে আজকের দিনে পরাক্রমশালী ইংরেজদের হাত থেকে আমার মাতৃভূমি তথা ভারতবর্ষ মুক্ত হয়। সেইদিনের কথা ভেবে আমার বুক গর্বে চওড়া হয়ে যায়। আজ স্বাধীনতা দিবসের দিনে যে সকল বীর সৈনিকরা মাতৃভূমির জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন বা এখনো সীমান্তে দিয়ে চলেছেন তাদের প্রতি আমার অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন করি। সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই। জোর গলায় বলতে চাই জয় হিন্দ। বন্দেমাতরম। 

রিপোর্টার-২- 

স্যার আজ আমাদের ভীষণ প্রাপ্তি হল আপনাকে পেয়ে। 

রিপোর্টার-১- 

আপনার পরিচয় জানতে পারলে ভালো লাগবে স্যার। আর এই যে আপনি এই কাগজের পতাকাটি হাতে তুলে স্যালুট জানালেন, আপনার কাছে এই কাগজের পতাকাটির মূল্য কি? 

বয়স্ক ব্যক্তি – 

এই পতাকাটি মাথার ওপর ধরে রাখা এবং আমার মাতৃভূমিকে রক্ষা করাই আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ও কর্তব্য বলেই মনে করি। যতদিন বেঁচে থাকব তা রক্ষা করে যাব জীবনের মূল্য দিয়ে। আজ আমাদের দেশের হাল যেমনই হোক না কেন আমার এই জীবন মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য উজার করে দেব। তার কারণ আমি একজন যোদ্ধা। ইন্ডিয়ান আর্মির এক বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলাম। আমি গর্ব বোধ করি। ইন্ডিয়াম আর্মিতে থাকাকালীন সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছি। প্রতিবেশী দেশের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করেছি। আমাদের দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে অনেক শত্রু সৈনিককে হত্যা করেছি। আমার একটি হাত আমার মা'কে রক্ষা করতে গিয়ে খোয়া যায়। তাতেও আমি দমে যায়নি। আর্মি থেকে অবসর নিয়ে আমি আজও  আমার ভারতবর্ষকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে যাই। তাই পতাকাটিকে আমি রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখতে পারি না। আমাদের তিরঙ্গাকে সবসময় উঁচুতে দেখতে চাই। আমি সকল ভারতবাসীকে বলতে চাই এই তিরঙ্গার মূল্য বোঝো। নিজের দেশ তথা নিজের মা'কে বোঝো। সবাই এক হয়ে বলো, জয় হিন্দ, জয় ভারত, বন্দেমাতরম। 

[ওখানে উপস্থিত সকলে মিলে একযোগে বলল, জয় হিন্দ, জয় ভারত, বন্দেমাতরম।]  

রিপোর্টার-২- 

আপনার কথা শুনে আজ স্বাধীনতার মূল্য আমরা বুঝতে পেরেছি, আমাদের মন ভরে গেল। (বাকি সকলের উদ্দেশ্যে) স্বাধীনতা দিবসের দিনে আসুন সকলে ব্রতী হই, আমরা সবাই আমাদের প্রাণ দিয়ে আমাদের দেশকে বাইরের শত্রু বা আভ্যন্তরীন শত্রুদের হাত থেকে যেন রক্ষা করতে পারি। আমাদের তিরঙ্গাকে সবসময় মাথার ওপর রাখতে পারি। তিরঙ্গার অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নেব না। আমাদের দেশ তথা আমাদের মা'কে সবাই মিলে যেন আগলে রাখতে পারি। জয় হিন্দ, জয় ভারত, বন্দেমাতরম।  

[দূরে কোথাও লতা মঙ্গেশকরের কন্ঠে "বন্দেমাতরম" গানটি হচ্ছে। সবাই স্যালুট করছে আর পতাকাটি নিয়ে হকারটি একটি উঁচু জায়গায় কাঠের খুঁটিতে আটকে দিচ্ছে।] 

-সমাপ্ত-

---------------------- 

স্বাধীনতা- ৮১

কেন মাঝরাতে

আর্যতীর্থ


মাঝরাতে  কেন শুরু বোঝোনি এখনো?

ভোর হয়ে গেছে কেউ না ভাবে যেন, 

কালিমা রয়েছে ছেয়ে তখনো যে গাঢ়, 

আলো হতে  আছে দেরি বহুকাল আরো, 

 পনেরো আগস্ট হওয়া মাঝরাত্তিরে,

 স্বাধীন তেরঙা এক মাথা তোলে ধীরে,

বুক চিরে কাঁটাতার চলে গেছে তার, 

ব্রিটিশ গিয়েছে ছেড়ে নিকষ আঁধার।


তাহলে কি এতদিনে হয়ে গেছে ভোর? 

আরে ধুর, রাত এখন আড়াই প্রহর,  

মশালের আলো দেখে বুঝতে পারো না?

 স্বাধীন ভাবতে পারে দুই চার জনা,

 বাকি সব নেতাদের প্রভু বলে ভাবে, 

ভক্তিবহর দেখে ব্রিটিশ পিছাবে, 

ধনী আজও আইনকে রেখেছে পকেটে, 

গরীবের চলে দিন চক্কর কেটে,

 জাতপাত আজও দেশে  কাটছে মানুষ,

 ধিকিধিকি পুড়ে চলে ধর্মের তুষ,  

স্বাধীনতা নেই আজও ভালোবাসবার, 

মাঝরাত নয় বটে, তবুও আঁধার।


মাঝরাত থেকে শুরু স্বাধীনতা তাই

এখনো অনেক বাকি আসা রোশনাই। 

চাঁদের আলোকে যদি ভোর বলে ভাবো, 

নিশাচর প্রাণীদের তাতে বেশ লাভও,

 আঁধারে ভয়াল লাগে শেয়ালের দল, 

দাবিয়ে রাখতে শুধু ভয় সম্বল, 

একটু একটু করে ফুরাবেই রাত, 

একদিন পাবো ঠিক নতুন প্রভাত।

 সে সকালে সকলেই স্রেফ ভারতীয়, 

যেমন গজব আলি, তেমন আমিও । 

সেখানে দলিত নেই, নেই উঁচু জাত,

 ভালোবাসা হলে কেউ বলে না জেহাদ, 

সেইখানে নেই কোনো শ্রেণী সংগ্রাম, 

দাম পায় ঠিক ঠিক সকলের ঘাম, 

খোয়ারি নয় এ জেনো কোনো নেশা করে, 

একদিন এইদেশ পৌঁছাবে ভোরে,

কে জানে তুমি আমি যাবো কি তা দেখে,

স্বপ্ন জ্বালাই মনে যেন প্রত্যেকে।


শুরু যার সেই কবে মাঝরাত থেকে..

--------------------- 

স্বাধীনতা- ৮২

আমাদের পদক্ষেপ পত্রিকার জন্য 

স্বাধীনতার 75 বছর পর সাধারণ মানুষের চোখে দেশের অবস্থা 

নরেন্দ্রনাথ নস্কর


ভারতের স্বাধীনতা পাবার পর প্রায় ৭৫ বছর কেটে গেছে। সেদিক দিয়ে এই বার ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস বলা যায়।

স্বাধীন ভারতের নাগরিক হিসাবে কি পেয়েছি বা কি পাইনি তার চুলচেরা বিশ্লেষন করতে এই লেখা নয়।


তবে রেডিও, টিভি, সংবাদপত্র ইত্যাদি দেখে ও পড়ে যা প্রতিফলিত হচ্ছে সেই নিয়ে কিছু কথা এখানে বলার চেষ্টা করব।


স্বাধীনতার বেশ কিছু বছর পর জন্ম এই পৃথিবীতে। 

ছোটবেলায় দেখেছি স্বাধীনতা সম্পর্কে কি গভীর দেশাত্মবোধ মনে জেগে উঠত। 

সিনেমার শেষেও দেখেছি জাতীয় পতাকা পর্দায় উড়ত। তখন দর্শকরা স্বতস্ফূর্তভাবে সবাই উঠে দাঁড়াত। 

মানুষের মধ্যে বেশ মূল্যবোধ বিদ্যমান ছিল।

 ছোটরা বড়দের যথা যোগ্য সম্মান করত। 

তখনও মানুষের মধ্যে কিছু ভাল ও অনেক খারাপ মানুষ থাকত। 

কিন্তু দিনের পর দিন ক্রমশ এই মুল্যবোধের অবনতি হতে থাকল।

খবর পড়ে যা দেখতাম, তখনও নেতাদের মধ্যে খারাপ ও ভাল দুটোই ছিল।  


এখন এমন অবস্থায় পৌঁচেছে যে, দুর্নীতি যেন হয়ে থাকে, এই মনোভাব সহে গেছে। 

টিভিতে দেখতে দেখতে মন খারাপ লাগে। 


টিভি দেখলে, শাসন ব্যবস্থায়  সাধারণের মনে বিতৃষ্ণা আসছে।


  ভাল সত নেতা খুঁজতে, ঠগ বাছতে যেন গাঁ উজাড় হয়ে লাগছে মনে হয় ।


স্বাধীনতার জন্যে দেশপ্রেমিক যোদ্ধারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছিল, সেগুলো যেন কিছুটা হলেও ব্যর্থ মাঝে মাঝে মনে হয়।


নামেই স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে।

 কিন্তু সেই দেশপ্রেম, দেশাত্মবোধ আর তো সত্যি দেখিনা কার্যক্ষেত্রে।


দেখানোর মত, উদাহরণ দেবার মতো সত, ত্যাগী, সাহসী নেতাও এখন যেন বিরল।


ভাল মানুষদের অযথা হয়রানি অনেক সময় করা হচ্ছে।

দুষ্ট মানুষের দমন ও শিষ্ট নরনারীদের পালন এখন কথার কথা যেন।


খারাপ কাজের প্রতিবাদ করা এখন যেন অন্যায় মনে হয়।

 তার পিছনেই নেতাদের রুষ্ট চক্ষু।

তাই প্রতিবাদ তার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। 


বেশিরভাগ শান্তিপ্রিয় মানুষ চুপচাপ থাকাই শ্রেয় মনে করছে।কারণ তাকে রক্ষা করার লোক খুব কম।

 প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না থাকায় দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।


যার প্রাপ্য সে না পেলেও, কোথাও বলার বা শোনার মানুষ কম।

কত মানুষ যে বঞ্চিত হচ্ছে তার হিসাব পাওয়া মুশকিল। 

বিনা প্রতিরোধে, ও প্রায় বিনা বাধায়, যেন দিনের পর দিন সমাজের অবস্থা খারাপ ও  নিম্নগামী মনে হচ্ছে। 

দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও সাধারণের,বিশেষ করে সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র সত মানুষদের অবস্থা ও প্রাত্যহিক জীবন যাত্রা কেমন যেন সহ্যের বাইরে মনে হয়।


ইচ্ছা থাকলেও কিছু বলার উপায় ও জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না।

স্বাধীনতার প্রাপ্তি যেন, শুধু শাসন ক্ষমতার পরিবর্তন।

নামে একটা আইন বা সংবিধান আছে। সাধারণের জন্য তার সঠিক প্রয়োগ বা প্রতিফলন কোথায়?


জিনিস পত্রের দাম উর্দ্ধমুখি।

 ক্রয় ক্ষমতা হয়ত আগের থেকে বেশ কিছু বেড়েছে। 

কিন্তু মূল্য সাধারণের আয়ত্বের থেকে সরে যাচ্ছে।


সংবিধানে থাকলেও বাক স্বাধীনতা কোথায়?

মৌলিক অধিকার কি সত্যি বাস্তবে প্রতিফলিত হয় ?


একতা বাদ দিয়ে চারিদিকে কেমন যেন প্রাদেশিকতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথা চাড়া দিচ্ছে। 

এর কারণ কি?


ধর্ম ভাষা নিয়ে কেন এত বিভেদ, বিদ্বেষ? এর সমাধান কোথায়?

অখণ্ড ভারতবর্ষ সেই ভাবনা যেন শুধু সংবিধানে।


বিদেশী শাসকদের থেকে মুক্ত হয়ে এ কোন নতুন সমস্যা?


শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বাসস্থানের অধিকার থাকলেও তার সত্যি মিলছে কতটা, তার পরিসংখ্যান কতটা বিশ্বাস যোগ্য, তার সঠিক  মূল্যায়ন কে করবে?

শিক্ষিত বেকারদের কর্ম সংস্থানের নিশ্চয়তা কোথায়?


শোনা যায় ভারতের যা প্রাকৃতিক সম্পদ, তার সদব্যবহার হলে, দেশে দারিদ্রতা থাকার কথা নয়।

কিন্তু বাস্তবে কি হচ্ছে, কে বলবে?


সবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল দেশের  মানুষের, ও শাসন ব্যবস্থার সততার সূচক।

উন্নত দেশগুলোর তুলনায়, ভারতের সূচক অনেক নিচে। 

এই সূচক নাগরিক ও শাসন ব্যবস্থ্যার সততার মূল্যায়ন অনেকটা প্রতিফলিত হয়। 

স্বাধীনতার এত বছর পরেও ভারত কেন উন্নত দেশ গুলোর কাছাকাছি যেতে ব্যর্থ?

তার উত্তর কোথায়? 


মানুষ আশাবাদী।

তবুও হয়ত এমন এক দিন আসবে, যখন ভারতের সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে সবাই সত পথে চলবে। 

শাসকরা সেবা, সততা দিয়ে নাগরিকদের সেবার সত্যি চেষ্টা করে যাবে।

দেখা যাক কি হয়? 


সেদিন সত্যি হয়ত দেশপ্রেমিক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন কিছুটা  হলেও বাস্তবায়িত হবে।

--------------------- 

স্বাধীনতা-৮৩

হে প্রজাতন্ত্র

আর্যতীর্থ


সাপ আছে আস্তিনে, নেই ওঝা মন্ত্র, 

 আর কত নীল হবে, বলো প্রজাতন্ত্র!

ওঝা বলে যাকে ডাকো, দেখা যায় নাগ সে,

তালা ভাঙা যাবতীয় প্যান্ডোরা বাক্সে,

এদিকে খিদের খাদ, বেকারির গর্ত,

ওই দিকে  ধর্মের ধমকের স্বর তো,

তুমি ভাবো দুধেভাতে থাক সব বাছারা,

ধারণাকে শব করে কিছু পাজী পাঝাড়া,

চালু আছে দেশ জুড়ে দাস খোঁজা যন্ত্র,

স্বাধীনতা কাকে বলে , বলো প্রজাতন্ত্র।


তুমি কি নিজেকে দেখো সময়ের আয়নায়?

কি ছিরি হয়েছে দেখো রাজনীতি বায়নায়।

শরীরে গয়না কত যুদ্ধের অস্ত্র,

অথচ আব্রু ঢাকে ছেঁড়াখোঁড়া বস্ত্র

বিরল হয়েছে আজ রিফুকার দর্জি

বরঞ্চ আরো ছেঁড়ে নেতাদের মর্জি,

ধুলিধুসরিত পায়ে পড়ে আছে শিক্ষা

রোজগার কেড়ে নিয়ে দেওয়া হয় ভিক্ষা

উড়োচুল ভরে গেছে জাতপাত উকুনে

আশীষে বলে না কেউ গর্ভতে খুকু নে

খুকু এলে মুশকিলে পড়ে যায় সকলে

আজীবন রাখা চাই পুরুষের দখলে,

ভোট ছাড়া আর নেই কোনোখানে সমতা

টাকায় খবর  কেনে এত তার ক্ষমতা,

ঘৃণারা ছড়ায় যেন মলে বোঝা অন্ত্র,

তুমি সে গন্ধ পাও, প্রিয় প্রজাতন্ত্র?


পথঘাট ছয়লাপ আজ দেশ-নিশানে,

বিপরীতে দেখে তবু রাষ্ট্র ও কিষাণে,

জি ডি পি ঋণাত্মকে সেনসেক্স আধা লাখ,

স্তম্ভেরা বাধ্যত গায় শেখা গাধাডাক,

ইতিহাস ছাঁটে লোকে যেরকম সুবিধে,

বিজ্ঞানে রয়ে গেছে জ্যোতিষের কু বিঁধে,

স্বাধীনতা এনে দিয়ে বলেছেন পিতারা

এখনও অনেক দূরে স্বপ্নের सितारा,

বলেছেন ঠিকঠাক  बनाना রিপাবলিক

বানান পিছলে বনে banana রিপাবলিক।

চেষ্টায় হয়তো বা যেতো বোজা রন্ধ্র,

তবু কারা চায় ডুবে যাক প্রজাতন্ত্র।


আমাদের পালানোর সব পথ বন্ধ,

দোহাই যেও না ডুবে, প্রিয় প্রজাতন্ত্র।

----------------- 

স্বাধীনতা- ৮৪

স্বাধীনতা 

নির্মলেন্দু কুণ্ডু


ঠিক ভোরবেলা

ঘুম ভাঙার অস্বস্তি কাটিয়ে

যখন উড়ে চলি পথে

একটা অদ্ভূত গন্ধমাখা হাওয়া

খেলে বেড়ায় মাথা-চোখ-মুখ-ঘাড়ে,

একটু ছোঁয়া হয়তো মনেও লাগে৷

পথে একটা ছোট্ট হাত

বাড়িয়ে দেয় তেরঙা—

"নে বাবু,শুধু দুটো টাকা দে

দুদিন কিচ্ছু খাইনি!"

তারপর হইচই,

বাঁশ পোতা,

ভাষণের চর্বিত-চর্বণ,

লজেন্স বিলি৷

একটু পরেই চায়ের দোকান—

"এই পচা,মাস্টারকে চা-বিস্কুট দে"

পচার পিঠে গতকালের কালশিটেটা তখনও দগদগে!

রাত্রি আসে,

শর্টকার্ট নিই এক নিষিদ্ধ গলিপথে—

"এই বাবু,যাবি!"

সময় কেটে যায়,

আমাদের বুলিও,

খুব চেনা কিছু খন্ডচিত্র আসলে একই থাকে,

স্বাধীনতা খোঁজে....

-------------------- 

No comments:

Post a Comment