মুক্তগদ্য-
জীবন ও ক্রিকেট ও জীবন
-
অনেকে বলে, জীবনটা ক্রিকেটের মতো। আমারও তাই মনে হয়। কখনো তা টেস্ট ম্যাচ, কখনো বা ২০ ওভারের ঝটিতি ব্যাপার।
আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। আরো অনেকেরও।
বাঙালিরা ছোট থেকেই ক্রিকেটীয় পরিবেশে বড় হয়। একদম ছোটবেলায় আমার এই খেলাটা ভালো লাগতো না। তবে রবি শাস্ত্রী, শ্রীকান্ত ও শচীনের খেলা দেখতে দেখতে এই খেলা আমার নিতান্তই ভালো লেগে যায়।
জীবনটাও ক্রিকেটেরই মতো; ইয়র্কার - বাউন্সারের ঠেলা সামলে ইনিংস গড়তে হবে।
মুহূর্তের ভুলেই উইকেট চলে যেতে পারে। রিভিউও বেশি পাবেন না!
ছোট থেকেই করতাম অফস্পিন, লেগস্পিন। রাজেশ চৌহান ও শ্রীনাথের বোলিং দুর্দান্ত লাগতো। হুবহু নকল করতাম কপিলদেবের অ্যাকশন।
আমি বরাবরই বোলারদের প্রতি দুর্বল ; ওদের কাজটা কঠিন এবং তা সত্ত্বেও ওরা নায়কের মর্যাদা পায়না। প্রায় সব কৃতিত্বই নিয়ে যায় ব্যাটসম্যানরা। পাড়ার ক্রিকেটে স্পিনের ধাক্কায় ব্যাটসম্যানদের নাকানিচোবানি খাইয়ে আউট করতে বেশ লাগতো। যদিও তখন হাত ঘুরিয়ে বল বেশি করতাম না।
তবে আমাদের ছোটবেলায় আজহার, শচীন, লারা, এরা ছিলেন সব তুখোড় ব্যাটসম্যান। পরে দ্রাবিড়, সৌরভ, জ্যাক কালিস্। প্রত্যেকেই ম্যাচউইনার।
তবে প্রকৃতপক্ষে ম্যাচ জেতায় বোলাররাই। আক্রম, অ্যামব্রোজ, ওয়ালশ, কপিল, বোথামের মত দুরন্ত কিছু বোলার আপনার টীমে থাকলে আপনার জয় আটকানো শিবেরও অসাধ্য।
ইদানিং আইপিএল দেখি ; সবই কেমন নকল- নকল লাগে। তবে আমার স্ত্রী ক্রিকেট বেশি দেখে না, যদি না সেটা ভারত- পাকিস্তান ম্যাচ হয়!
আসল খেলা হল টেস্ট ম্যাচ ; খেলোয়াড়দের জাত চিনিয়ে দেয়।
বর্তমান আমাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ দল ভালো, তবে সেরা বলবো না। প্র্যাকটিসের অভাব আছে। ব্যাটিং বেশ দুর্বল।..
এবারে নিউজিল্যান্ড বা ওয়েস্টইন্ডিজের কাপ জেতার সুযোগ অনেক বেশি। বস্তুতঃ, ক্যারিবিয়ানদের মতো সহজাত ক্রিকেট প্রতিভা কারও নেই।
ক্রিকেট বড় রোম্যান্টিক খেলা। ক্রিকেট - সাংবাদিকতাও একটা বিরাট পেশা। পিটার রোবাকের মিডউইক পত্রিকায় বিশ্লেষণধর্মী লেখা খুব ভালো লাগতো। ধারাভাষ্যকারদের মধ্যে ভালো লাগে রিচি বেনো ও সঞ্জয় মন্জরেকরের কমেন্ট্রি।
এবারে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ধাত্রীভূমি ইংল্যান্ডে। দেখবো অবশ্যই।
শেষে বলি, জীবনটা ক্রিকেট ; ক্রিকেটই জীবন ।।
No comments:
Post a Comment