Monday, January 14, 2019

মধুমিতা সেনগুপ্ত


বড়গল্প -
নতুন ফ্ল্যাট

              প্রায় অর্ধেক দামে অফিসের কাছেই ফ্ল্যাট পাওয়া যাবে শুনে অনিন্দ্য দেরি করেনি অফিস থেকে লাঞ্চ ব্রেকে একাই চলে গিয়েছিল মালকিন ভদ্রমহিলা চণ্ডীগড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে স্থায়ী ভাবে  থাকবেন ফ্ল্যাট বিক্রি হলেই ফ্লাইটের টিকিট পাঠাবে জামাই একমাত্র পিছুটান এই ফ্ল্যাট  
       অনলাইনে পঁচিশ হাজার টাকা পাঠিয়ে তড়িঘড়ি বুকিংটা সেরে ফেলেছিল শ্রেয়াকে সামনের রবিবার এনে চমকে দেবে পূর্ব দিকে একটা পার্ক আছে ওদিকটায় কোনোদিন বাড়ি উঠবেনা আলো বাতাসের কোনো অভাব হবেনা বারাসাতের ভাড়া বাড়িতে খুবই অসুবিধা হয় থাকতে দুজনেরই অফিস দূরে তার উপর একতলার দুটো ঘরই স্যাঁতস্যাঁতে রোদ ঢোকেই না চারপাশে বড়বড় বাড়ি বাড়ির মালিক তাঁর স্ত্রী অবশ্য বেশ ভালো মানুষ ওদের খোঁজ খবর নেন সুবিধা অসুবিধায় পাশে থাকেন কিন্তু এখানে অনেক আরামে থাকা যাবে  
        রবিবার দুপুরে খেয়ে দেয়ে শ্রেয়াকে সারপ্রাইজ দিতে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে অনিন্দ্য মালকিন মিসেস সরকার দরজা খুলে দেন শ্রেয়া প্রথমে ফ্ল্যাট এবং আশেপাশের খোলা জমি চওড়া রাস্তা পার্ক সবদেখে খুব খুশি হয় পরে যখন বুঝতে পারে অনিন্দ্য তাকে না দেখিয়েই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট টা বুক করে দিয়েছে তখন সে একটু রেগেই যায় অনিন্দ্য সব কাজে তাড়াহুড়ো করে শেষে ছড়িয়ে ফেলে  
―“এত ভালো জায়গায় ফ্ল্যাট ..এত কমদামে ছাড়ছেন কেন মিসেস সরকার ? ” ক্যাব উঠেই শ্রেয়ার প্রশ্ন  
―“ সবটাতে এত গোয়েন্দাগিরি করবি না তো সেকেন্ড হ্যান্ড সব জিনিসই কম দামে বিক্রি হয় সেটা মাথায় রাখিস " বলে অনিন্দ্য যদিও সে জানে শ্রেয়ার কথার যুক্তি আছে দামটা সত্যি ভীষণই কম জলের দরে ফ্ল্যাটটা ছেড়ে দিচ্ছেন মিসেস সরকার  
―“ হম্মমম সেটা ঠিকই বলেছিস কিন্তু মনে হচ্ছে আর একটু খোঁজ নিলে পারতিস একটা জিনিস খেয়াল করেছিস ? ফ্লোরের অন্য ফ্ল্যাট টাতে কেউ থাকেনা ? " ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে শ্রেয়া  
―“ হ্যাঁ আমি দেখেছি বাইরে তালা আগের দিন তাই ছিল হয়ত ওখানকার বাসিন্দারা বেড়াতে গেছে কোথাও " হালকা স্বরে জানায় অনিন্দ্য  
―“ উঁহু আমি দেখেছি কোলাপসিবলের মাঝখানে নিচের দিকে মাকড়শার জাল ওখানে অনেক দিন কেউ ঢোকেনি ” 
―“আশ্চর্য ! সবটাতে বাগড়া দেওয়া তোর স্বভাব হয়ে গেছে যা ওটা ক্যানসেল করে দিচ্ছি কোথায় উল্টোদিকে মাকড়শার জাল হয়েছে তোর চোখেই পড়ে দুত্তোর .. " অনিন্দ্য ফোন হাতে নিয়ে নম্বর ডায়াল করতে যায়  
―“ বাজে বকিস না কাকে ফোন করছিস ? অদ্ভুত তো ! লাখ লাখ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনছি ঠিকঠাক খোঁজ নিয়েছিস কিনা জানবো না ! ঠিক আছে পরে কোনো ঝামেলা হলে আমি তোর পাশে নেই আমাকে কত দিতে হবে বলে দে কাল চেকে সই করে দেব টাকা তুলে নিস " শ্রেয়া জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় ছুটির দিন কোনো ঝামেলা করতে তার বিরক্ত লাগে
           অনিন্দ্যর বাবা বেশ কিছু টাকা ছেলেকে পাঠিয়ে দিলেন দুজনেরই চার পাঁচ বছরের চাকরি কুড়িয়ে কাঁচিয়ে টাকা জোগাড় করে বাকিটা ধার নিয়ে মিসেস সরকারের টাকা মিটিয়ে দিলো ভদ্রমহিলা যাওয়ার আগে একদিন ওদের দুজনকে ডিনারে ডাকলেন  
―“ আমার বড় সাধের ফ্ল্যাট এটা আমাদের সুখের নীড় তোমাদের আঙ্কেল বছরখানেক আগে হঠাৎ আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন ঘুমের মধ্যেই .. আমি এই জায়গা এত স্মৃতি ছেড়ে মেয়ের কাছে যেতে চাইনি কিন্তু এবারের দেওয়ালীতে মেয়ে এসে জিদ ধরে বসলো আমাকে কিছুতেই এখানে একা থাকতে দেবে না আমিও ভেবে দেখলাম আমারও প্রায় ষাট বছর হতে চললো একা অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে কাউকে ডাকতেও পারবোনা তাই চলে যাচ্ছি .. আমার একটা অনুরোধ তোমাদের রাখতেই হবে   পূবের ব্যালকনির  ইজিচেয়ারটা আর  টব শুদ্ধু বাহারি গাছগুলো যেখানে যেমন আছে রেখে যাবো এই ঘরের বেলজিয়াম গ্লাসের আয়না বসানো কাঠের আলমারি টাও বিক্রি করবোনা এগুলো রইলো তোমরা না কোরোনা প্লিস আর দক্ষিণের ব্যালকনিতে একটা ঝোলানো বেতের দোলনা চেয়ার আছে ওটা তোমরা ব্যবহার করলে আমি শান্তি পাবো
          চিকেন আর রুমালী রুটি দুটোই মিসেস সরকার দারুন বানিয়েছেন তার উপর কিছু সৌখিন পুরোনো দিনের কিছু জিনিস , রং করা মাটির পাত্রে এতগুলো সতেজ গাছ তিনি বাড়তি উপহার হিসেবে দিচ্ছেন দেখে দুজনেই মনে মনে খুশি হলো
    মাস দেড়েক বাদে মনের মত অয়েল পেন্ট করে ,আধুনিক  গৃহসজ্জা  সেরে গৃহপ্রবেশ করে সুখী দম্পতি এখানে একটাই অসুবিধা যে যার সে তার মতো বাঁচে কেউ কারো সাথে বিশেষ মেশে টেসে না বাকি ফ্লোরের ফ্ল্যাট গুলোতে মিষ্টির বাক্স দিয়ে এসেছে দুজনে সবাই কেমন নিরুত্তাপ ভাবে মিষ্টি নিল দরজা বন্ধ করে দিলো কোনো আবাহন বিসর্জনের রীতি না মানুক অন্তত ভদ্রতা করে নাম জিজ্ঞাসা করতে পারতো কিন্তু সবাই যেন ওদের এড়াতে পারলে বাঁচে  
একটু খারাপ লাগে দুজনেরই  
          সবাই চলে যাওয়ার পর শ্রেয়াকে সিল্কের লাল টুকটুকে নতুন গাউনটা  দিয়ে ঠেলে স্নানে পাঠায় অনিন্দ্য আগে থেকে কিনে এনে লুকিয়ে রাখা সুগন্ধ যুক্ত রঙিন মোমবাতি গুলো বার করে এদিকে ওদিকে সাজিয়ে জ্বেলে দেয় গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দেয় খাটে আজ নতুন বাড়িতে তার সবকিছুই ভীষণ নতুন নতুন মনে হচ্ছে বিদেশি পারফিউম এর নিবিড় পুরুষালি  হাতছানি স্প্রে করে নেয় সারা শরীরে  
      দুজনের ফোন সুইচ অফ করে রেখে আসে ড্রয়িং রুমের সেন্টার টেবিলে দুটো বড় মোমবাতি দেশলাই আর টর্চ মিসেস সরকারের দেওয়া আলমারিতে গুছিয়ে রাখে এদিকে পাওয়ার কাট হয়না বললেই চলে তবু সব গুছিয়ে রাখাই ভালো এরপর ঘরে ঢুকে অপেক্ষা করে শ্রেয়ার জন্য আর স্বপ্ন দেখে ..
      
        দরজা খুলে ঢুকে শ্রেয়া খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় অনিন্দ্য যতটা স্বপ্ন দেখেছিল তার থেকে অনেক বেশি জীবন্ত প্রাণোচ্ছল শ্রেয়াকে পেয়ে আবেগে ভেসে যায় সে  .. 
―“ একি ! ব্যালকনি তে কে ? " ―সুর তাল কেটে আঁতকে ওঠে শ্রেয়া  
―“ কোথায় ? ধুর ব্যালকনি তে কে থাকবে ?” অনিন্দ্য এত রোমান্টিক সময়ে অন্য কিছু ভাবতে রাজি নয়  
―“ দূর বাবা ! ছাড় না নির্ঘাৎ চোর এসেছে পরিষ্কার দেখলাম একজন জানালার কাঁচের ওপারে হেঁটে গেল ফিসফিস করে বলে শ্রেয়া  
―“উফ্ফ কি বেরসিক চোর রে বাবা দাঁড়া দেখে আসি বিরক্ত অনিন্দ্য একটা লাঠি খোঁজে আগেকার দিনে দরজায় খিল থাকলো খুব বৈজ্ঞানিক সুরক্ষা পদ্ধতি একঘা দিলে চোর শেষ এখন ফ্ল্যাটে কিছু নেই যা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে আত্মরক্ষাটা করা যায় কিচ্ছু না পেয়ে পর্দা খুলে পর্দা ঝোলানোর স্টিলের রড টা হাতে নিয়ে একটু সাহস পায় অনিন্দ্য চোর আসলেও সে খালি হাতে এসেছে এরকম কোনো গ্যারান্টি কেউ দেয় নি শ্রেয়া ততক্ষণে উঠে হাউসকোট পড়ে নিয়েছে
        ব্যালকনির দরজাটা শব্দ না করে খুলে ফেলে অনিন্দ্য শ্রেয়াকে ইশারা করে ব্যালকনির আলোটা জ্বালিয়ে দিতে শ্রেয়া সুইচ টেপে কিন্তু বাইরে আলো জ্বলে না শ্রেয়া বাকি সুইচ গুলো টেপে কিন্তু দুজনেই অবাক হয়ে দেখে কোনো আলোই জ্বলছে না পার্কের গেটে আলো জ্বলছে তাই দরজা খুললে আবছা ভাবে সবই দেখা যাবে শ্রেয়া হাতে একটা জলভরা বোতল নিয়ে নেয় ছুঁড়ে মেরে চোরটাকে ঘায়েল তো করা যাবে  
       একটানে দরজা খুলে বাইরে প্রায় লাফিয়ে বার হয় দুজনে একঝলক অতি ঠান্ডা হওয়া শুঁটকি মাছের মতো দুর্গন্ধ বয়ে আনে দুজনের নাকে ব্যালকনিটি ফুট পনেরো হবে একদম শেষ মাথায় আবছা আলো আঁধারিতে  ইজিচেয়ারে একজন বয়স্ক মানুষ বসে আছেন পরনে সাদা ধুতি আর ফতুয়া হাতে একটি ভর দিয়ে চলার লাঠি মানুষটির চোখে মুখে রাগের অভিব্যক্তি  
―“ মাগো ! ” ভয়ে অনিন্দ্যর হাত চেপে ধরে শ্রেয়া অনিন্দ্য হাত থেকে স্টিলের রড টা মাটিতে পড়ে যায় সশব্দে  
―“ এটা আমার বাড়ি কেন এসেছো তোমরা ...চলে যাও ..” বহুদূর থেকে একটা দমবন্ধ আর্তনাদের মতো ভেসে আসে কিছু শব্দ পরক্ষণেই সেই আবছায়া মূর্তি  লাঠিটি সজোরে ছুঁড়ে মারেন ওদের দিকে  
  অনিন্দ্যকে শ্রেয়া সজোরে টেনে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে না নিলে ওর মাথাটা আজ ফেটে যেত ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দেয় শ্রেয়া দুজনে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ চেষ্টা করেও কোনো চিৎকার  বার হয়না শ্রেয়ার দুমদাম করে দরজাতে বাইরে থেকে ধাক্কা পড়তে থাকে বেশিরভাগ মোমবাতি নিভে গেছে একটা কোনোমতে জ্বলছে অসম্ভব আতঙ্ক ফুটে ওঠে অনিন্দ্য মুখে সেও কথা বলার ক্ষমতা হারিয়েছে  
―“মোমবাতি আর আছে ? ফোন কোথায় ? " ফিসফিস করে বলে শ্রেয়া অনিন্দ্য ঘাড় নেড়ে ড্রয়িং রুমের দিকে ইশারা করে দরজায় ধাক্কা বন্ধ হয়েছে দুজনে হাত ধরাধরি করে ড্রয়িরুমে ঢোকে রাস্তার আলো জানালার কাঁচের মধ্যে দিয়ে যেটুকু ঢুকছে তাতে অস্পষ্ট ভাবে সবকিছুই দেখা যাচ্ছে একদৌড়ে শ্রেয়া নিজের ফোনটা তুলে নেয় সুইচ অন করে টর্চটা জ্বেলে নিয়ে অনিন্দ্য কে ইশারা করে অনিন্দ্য কাঁপা হাতে এক পাল্লায় আয়না লাগানো আলমারির অন্য পাল্লাটা খুলে ফেলে শ্রেয়া সামনে গিয়ে টর্চের আলো ফেলে অনিন্দ্য কে দেখতে সাহায্য করে হঠাৎ তার চোখ পড়ে আয়নার দিকে পিছনের জমাট অন্ধকার থেকে তার পিছনে এসে দাঁড়ায় সেই ভয়ঙ্কর রাগী মূর্তিটি তার জ্বলন্ত চোখে প্রচন্ড আক্রোশ আর ঠোঁটে বিশ্রী কুটিল হাসি অনিন্দ্য হাতে মোমবাতি নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখে মাত্রাছাড়া ভয়ে শ্রেয়া সাদা হয়ে গেছে আর তার পিছনেই ভয়াল ক্রুর এক বৃদ্ধ দাঁড়ানো যার বাকি শরীরটা তাল তাল অন্ধকারে ঢাকা শ্রেয়া জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায় নৃশংস এক হাসি হেসে ওঠে সেই ভয়াল মূর্তি জ্ঞান হারায়  অনিন্দ্য ...
        শ্রেয়ার ফোন বেজে ওঠে ওর মা অনেক্ষনের চেষ্টায় লাইনটা পান ফোন ধরার পর তিনি অনুযোগ করে বলেন 
―“ কি রে ! সুইচ অফ করে রেখেছিস কেন দুজনে ! শোন চিন্তা করিস না আমরা এখনো বাড়ি পৌঁছাতে পারিনি সামনে কোথায় একটা বাস খারাপ হয়ে গেছে ব্যাস সারা রাস্তা জুড়ে জ্যাম তোর বাবা ড্রাইভার সবাই রাস্তায় নেমে হাঁটছে ভালো লাগে বলতো ? কত গাড়ি পাশের গলি গুলোতে ঢুকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে আমাদের তো মধ্যমগ্রাম যাওয়ার আর রাস্তা নেই মনে হয় অনিন্দ্য কে জিজ্ঞাসা করে দেখতো শুনছিস ? কিরে সোনাই কোনো উত্তর দিছিস না কেন ! কি হলো ! সোনাই ? এই শ্রেয়া কি হোলো কথা বলছিস না কেন ? ” 
―“ ওরা তো মাটিতে পড়ে আছে শ্রেয়ার মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে ..হা হা হা " একটা ঘ্যাস ঘ্যাসে গলার আওয়াজ পান শ্রেয়ার মা  
―“ ওমা ! সেকি ! এই শুনছো শিগগিরি এদিকে এসো ..” স্ত্রী আচমকা আর্তনাদে ছুটে আসেন শ্রেয়ার বাবা ড্রাইভার ছুটে আসে শ্রেয়ার মায়ের মুখ থেকে অদ্ভুত কথা শুনে ফোন হাতে নিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করেন ―“ হ্যালো !আপনি কে বলছেন ! " 
―“ আমি বিকাশ সরকার আমার ফ্ল্যাট এর মেঝেতে ওরা গড়াগড়ি খাচ্ছে এখানে আমি কাউকে থাকতে দেব না মেরে ফেলবো ..শেষ করে ফেলবো .. " ফোন কেটে যায়  
―“কি সর্বনাশ ! এই গাড়ি ঘোরাও আমি এখুনি বিধাননগর থানায় ফোন করছি কুণাল আছে ওখানে এখুনি পুলিশের সাহায্য দরকার   এতো খুন করার হুমকি দিচ্ছে " ফোন ঘেঁটে বন্ধুর ছেলে কুণালের নম্বর বার করেন শ্রেয়ার বাবা  
        পরদিন শ্রেয়ার বাপের বাড়িতে আসেন কুণালের বাবা অসিত বাবু বেশি ডোজের ঘুমের ওষুধ দিয়ে শ্রেয়া এবং অনিন্দ্য কে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে তিনি বলেন ―“ পুরোটাই বড় অদ্ভুত ঘটনা রে বাবলা কুণাল রা পুলিশি তদন্ত করছে ওরা তোর ফোন পেয়ে দশ মিনিটের ভিতরেই ফ্ল্যাটে পৌঁছে যায় দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল ভেঙে ঢোকে পুলিশ ওদের হাসপাতালে পাঠিয়ে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে ফ্ল্যাটের আগের মালিক বিকাশ সরকার ভীষণ বাজে লোক ছিল গোঁয়ার এবং অসভ্য প্রকৃতির কেউ ওনাদের সাথে সম্পর্ক রাখতো না পাড়ার নাইট গার্ড একদিন বারান্দার ইজিচেয়ারে বা দোলনায় ওনার আবছায়া মূর্তি দেখে ভয় পেয়েছে শ্রেয়াদের আরো খোঁজ খবর নিয়ে ফ্ল্যাট টা কেনা উচিৎ ছিল   পুলিশ তদন্ত করবে কিন্তু জেনে রাখ কিস্যু বের হবে না বৌদি ওদের ওই ফ্ল্যাটে আর যেতে দেবেন না

―“ না না আমি মরে গেলেও আর ওদের ওখানে যেতে দেবনা মা গো আমার একটাই সন্তান ওরা বেঁচে থাক ঠাকুর রক্ষা করেছেন " দুহাত কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম করেন শ্রেয়ার মা  
―“আর হ্যাঁ শ্রেয়ার ফোনে আপনার গোটা ছয়েক মিসড কল পেয়েছে ওরা কিন্তু কোনো ফোন রিসিভ করা হয়নি ..বাবলা , তোদের সাথে বিকাশ সরকারের প্রেতাত্মার কথা হয়েছে .." বলেন অসিত বাবু
      সারা ঘরজুড়ে যেন একঝাঁক শীতল নীরবতা নেমে আসে ।।

No comments:

Post a Comment