Saturday, April 4, 2020

ইলা কারকাট্টা



কবিতা-
ইচ্ছা

মুর বিটিটো গান গাইবে
আর মুর বেটা কবিতা বুলবে।
রবি ঠাকুরের জন্মদিন তো
তাই ইস্কুলে ফাংসানটো হবে।
আমিও জিব উদের ইস্কুলে
ভীরের মাঝে দাড়ায়েন থাকবো।
মুর বেটা-বিটির গান কবিতা শুনবো
দেখবো ফাংসানটো কেমন হবে।
সেই ছুটোবেলায় একবার গিয়েছিলম
ভীরের মাঝে দাড়ায়েন ফাংসানটো দেখেছিলম।
বাড়ি এসে মাকে বলেছিলম 'আমি
লিখা-পড়া কুরতে চাই,ইস্কুলে জিবো'।
মা বললে 'অতো টেকা কুথায় বিটি।
ওসব ছাড়ান দে,ঘরের কাম শিখ'।
বাপ বলল 'আমার সাথে জমিনতে চল,
উতে টেকাও আসবে ঘরে।
লিখা-পড়া কুরে কুনো কাম নাই,
ওসব ছাড়ান দে বিটি'।
তারপর একদিন বিয়া হলো
আমার নিজের ঘর হলো।
ঘরের কাম করি আর
মরদের সাথে কামে যাই জমিনতে।
মুরা দু'জন মিলে
বাবুর জমিনতে জন মজুরী খাটি।
বলে ছিলম একদিন মরদকে
লিখা-পড়ার কুথা,ইস্কুলের কুথা।
মরদ হেসে বুললে,'এসব তুর হবার লয়
ওসব তুই ছাড়ান দে দিকি'।
তারপর বিটি হলো,বেটা হলো
আমার বয়স বেইরে গেলো।
তবে উদের আমি ইস্কুলে দিয়েনছি
উরা লিখা-পড়া করে।
একদিন মুর বেটাকে বললম
আমায় লিখা-পড়া শিখায় দে দিকি।
বেটা-বিটি তো হেসেই সারা
মুর লিখা-পড়ার কুথা শুনে।
বুললে'মাএসব তুর হবে লাই রে,
এসব তু ছাড়ান দে দিকি'।
সবাই আমায় ছাড়ান দিতে বুললে
কেউ আমায় পড়তে বুললে নাই।
কিন্তু তবুও আমি হার মানি লাই
লিখা-পড়া আমি কুরতে চাই।
গায়ের একধারে পঞ্চায়েত ঘরে
হয় বয়স্ক শিক্ষা অভিযান।
নাম লিখায় দিলম সেখানে
মাষ্টার বুললে'শিখার কুনো বয়স লাই'।
কামের থেকে ফিরার পথে
আমি রোজ যাই সিখানে।
একদিন আমিও রবি ঠাকুরের
কবিতা পড়ব,তার কবিতা বুলবো।
একদিন আমিও সবার মতো
ঠিক লিখা-পড়া শিখবো।

No comments:

Post a Comment