Saturday, December 1, 2018

গৌতম চট্টোপাধ্যায়



প্রবন্ধ-
WORLD’S UNBELIEVABLE FACTS


আমরা প্রসারিত; সময়ের বিবর্তনগামী মেশিনে চেপেজে সন্ধিস্থল আজ উপস্তিত তা একাধারে উন্নত, সভ্য ও পরিপূর্ণও বটে। কিন্তু আদপেও কি তাই!! বিশ্বের পরিমিধি মেপে চলা যুগান্তকারী বিজ্ঞানের আড়ালে এমন কিছু উপস্থিত যার এক কোপেই এই সভ্যতা আছড়ে পরে মাটিতে। এই রহস্যময় ভূমণ্ডলের আশ্চর্য মালাগাথার ছবি যেখানে আমাদের দম্ভ, অহংকার সব ফিকে হয়ে আসে। এমন কিছু ব্যাখ্যাহীন আশ্চর্য তুলে ধরছি যা বছরের পর বছর রয়ে গেছে সেই তিমিরেই। অন্ধকার যে বড়ই প্রিয়।

১)THE GREEN CHILDREN:
এমনই অদ্ভুত ভাই বোনের হদিশ পাওয়া যায় বারোর দশকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর ঊলপিট গ্রামে। শারীরিক গঠন মানুষের মত হলেও তাদের গায়ের রঙ ছিল সবুজ। ভাষা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং কোন খাবারই যেন তাদের রুচি তে আসে না। পরবর্তীকালে, ছেলেটির মৃত্যু হলেও মেয়েটি বেঁচে যায় আর সে ফিরে পায় তার স্বাভাবিক গায়ের রঙ। ইংরেজি ভাষার উপর দখল আসার পর সে জানায় যে তারা আসলে “St. Martin” নামক জায়গার প্রবাসী, যেখানে সর্বদাই গ্রাস করেছে অন্ধকার কারণ সেখানে সূর্যোদয় হয়না কখনো। অর্থাৎ The Land of No Sun. বিজ্ঞানীরা বলেন, হয়ত তারা কোন এক প্রাচীন গুহার বসবাসকারী, আর্সেনিকের ক্ষতিগ্রস্তেই হয়ত এই সবুজের কারণ আবার ভিন্ন গ্রহের যোগাযোগও একবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

২)THE SCREAMING MUMMY:

১৮৮৬ খ্রিষ্টব্দে আবিষ্কার হয় অদ্ভুত আর্তনাদরত এই মমি। মুখ হা’ করা এই মমিটির প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এখনও নিখুত যা একপ্রকার প্রায় অসম্ভব। মাঝে মাঝেই এই মৃত দেহটির ভিতর থেকে বেড়িয়ে আসে এক প্রবল আর্তনাদ যা ইহ জগতের প্রথা মেনে সম্ভব নয়।
২০০৮ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক ডকুমেন্টারি জানান দেয় যে ওই মমিটি আসলে রাজকুমার পেন্টওয়ারের যে সিংহাসনের লোভে তার পিতা তথা ফারোয়া র‍্যামসে ৩ কে হত্যা করার চক্রান্ত করে।  এর প্রতিরূপে রানি রাজকুমারের শরীরে বিষ প্রয়োগ করের আর সেই বিষক্রিয়াই এই মৃত্যুর কারণ। তার দেহ মমি বানিয়ে ভেড়ার চামড়ায় মুড়িয়ে দেওয়া হয়। হয়ত সেই বিষের জ্বালা মৃত্যুর পরেও তাকে মুক্তি দেয়নি।

৩) THE POLLOCK TWINS:

১৯৫৭ সালে, দুই বোন, ১১ বছরের জোওয়ানা  ও ৬ বছরের জ্যাকলিন পোলক রহস্যময় ভাবে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। ঠিক এক বছর পর তাদের মা যমজ সন্তান প্রসব করেন যথা জেনিফার ও জিলিয়ান। অদ্ভুত ভাবে দেখা যায় যে ছোট মেয়ে জেনিফারের জন্মদাগ রয়েছে ঠিক সেই জায়গায় যেখানে জ্যাকলিনের ছিল। যমজ বোনেরা সেই সব খেলনার আবদার করতে থাকে বা সেই সব জায়গায় যাওয়ার বায়না করতে থাকে যা একসময়ে সেই রহস্যময় মৃত বরণকারী বোনেদের ছিল খুব প্রিয়। অথচ সেই সব খেলার জিনিষ বা স্থান এই যমজ বাচ্চাদের জানার কথাও নয়। হয়তো তারাই ফিরে এসেছে আবার; নবরূপে।

৪) CUBAN UNDERWATER CITY:
জলের তলায় রয়েছে আস্ত এক শহর!! ঠিক এই খবরই ২০১২ সালে কাঁপিয়ে তোলে সারা বিশ্বকে যখন জানা যায় কিউবা শহরের জলরাশির তলায় অবস্থান তার পূর্বপুরুষের। এই প্রাচীন শহরের ভগ্নাংশের অবস্থান প্রায় ৬০০ ফিট গভীরে যার বয়স আনুমানিক ১০০০০ বছর। অসংখ্য ফিনিক্সের ভাস্কর্য উদ্ধার হয় আর রয়েছে এমন অনেক স্থাপন যার সূত্র অজানা। এর সাথে  ৪টি পিরামিড আবিষ্কৃত হয় যার মধ্যে দুটো  মিশরের গিজা পিরামিডের থেকেও আকার ও আয়তনে বড়। এর থেকেই বঝা যায় এক সময়ের প্রাচীন প্রাণবন্ত এই সভ্যতা মিলিয়ে যায় সমুদ্র ফুলে ওঠায় বা কোন এক প্রভাবশালী ভূমিকম্পে।

৫)THE BIMINI ROAD:

সমুদ্রের গভীরে আবিষ্কার হওয়া অদ্ভুত পাথরের এই রাস্তা কেই বলা হয় বিমিনি রোড। বিজ্ঞানীরা মনে করেন মানুষের তৈরি এই রাস্তাটি অ্যাটলাণ্টিসের কোন এক প্রাচীন সভ্যতার প্রতীক। তবে এই রাস্তার নিদর্শন এবং তার কারণ কিন্তু এখনও অধরাই। ১৩ ফিট দৈর্ঘ্যের বিশালাকার এই পাথরের স্তূপগুলোর অবস্থান সমুদ্রতটের ২০ ফিট নিচে। পরিষ্কার জল থাকার দরুন তা উপরিতল থেকেও দৃশ্যমান। কিছু কিছু পাথরের আকৃতি এমন এবং তা এতই মসৃণ যে মানুষের কারুকার্য ছাড়া তা একপ্রকার প্রায় অসম্ভব।
এই রহস্যময় রাস্তা কে ঘিরে উঠে এসেছে নানা মিথ। ১৯৭৯ সালে আমেরিকার দুই ডুবুরি নাকি জলের তলায় একটি ত্রিকোণ বস্তু দেখতে পায় যা খুব দ্রুত উঠে আসে গভীর সমদ্র থেকে, ৩-৪ তে পাক খেয়ে জলের ওপরে ভেসে উঠেই নাকি মিলিয়ে যায়। আরেক ডুবুরি জানান দেয় যে সে দশ ফুট লম্বা একটি মানুষ মূর্তি দেখতে পায় যা কোন ডাইভিং সুট ছাড়াই নির্বিকারে জলের নিচে হেটে বেড়াচ্ছে। তীব্র জলস্রোত ও অতিমাত্রায় সার্ক থাকার দরুন জায়গা টা গবেষণার অনুপযুক্ত।

৬)THE TAOS HUM:

মেক্সিকোর একটি ছোট্ট শহরের নাম তাওস। মরুভূমির বালুতটের মধ্যে দিয়ে ভেসে আসে এই অদ্ভুত এক আওয়াজ। স্থানিয় রা তো বটেই এমন কি পর্যটকরাও এই আওয়াজ পেয়ে থাকেন। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন এটা অতিপ্রাকৃতিক কিছু আবার কেউ কোন লুকানো সত্যে বিশ্বাসী। সে যাই হোক, তবে কানে এই আওয়াজ শুনতে পেলেও কোন শব্দ জন্ত্র তার নাগাল পায়নি। বলা হয়,আওয়াজটা অনেকটা নাকি দূরে  চলতে থাকা কোন ডিজেল ইঞ্জিনের শব্দ যার আনুমানিক উথপত্তিস্থল ওই বাড়ির অন্দরমহল। ১৯৭৭ সালে একটি ব্রিটিশ দৈনিক পত্র  প্রায় ৮০০ টি চিঠি সামনে আনে যেখানে ধরা পরে অনিদ্রা, মাথার তীব্র যন্ত্রণা, অমানবিক ছটফটানি, উদ্বেগ, ভয় এই আওয়াজের দরুন। বিভিন্ন সময়ে  অনুসন্ধান করেও এর ফল এখনও অধরাই।

এরকম ভাবেই লুকিয়ে আছে নানা অজানা, অচেনা, ব্যাখ্যাতীত সব রহস্য যার কোন উপসংহার নেই। শুধু ১ টা বা ২টো ঘটনা নয়, প্রায় ১০০ এর ওপরে রয়েছে অতলেই থেকে যাওয়া প্রান্তর। হয়তো একদিন সত্য উন্মোচন হবে বা হয়তো জীবনে এমন কিছু সম্পর্ক থাকে যার প্রকৃত ব্যাখ্যা কাউকেই দেওয়া যায় না।।



2 comments:

  1. বেশ অন্যরকম। অজানা কিছু জিনিস জানলাম।

    ReplyDelete
  2. আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই দাদা

    ReplyDelete