অণুগল্প -
পথের শেষ নেই
গত
কয়েকদিন ধরে অফিসে ভীষণ কাজের চাপ, আজও তার ব্যতিক্রম নয় । অফিসের ঘড়ির দিকে তাকাতেই চমকে
উঠলাম । রাত ১১টা বেজে ১৫ মিনিট । তড়িঘড়ি অফিসের ফিফ্থ ফ্লোর থেকে নেমে
চলে এলাম রাস্তার মোড়ে । বেশ নির্জন হয়ে গেছে রাস্তাটা । এই সময় বাস পাওয়া
তো দুরের কথা,
ট্যাক্সি পাবো কিনা সন্দেহ । রাস্তার উত্তর দিক ধরে সোজা
হাঁটতে লাগলাম । খানিকটা যাবার পর
দেখলাম অনেক দূর থেকে একটা গাড়ির আলোর ছটা ক্রমশঃ এগিয়ে আসছে আমার দিকে । মনে
বেশ বল পেলাম । যাই হোক দুশ্চিন্তা কাটলো তাহলে, হ্যাঁ একটা ট্যাক্সি আসছে, আমি সাথে
সাথেই হাত নাড়িয়ে ট্যাক্সিটিকে দাঁড় করালাম । প্রায় অফিসের
সামনে থেকেই ট্যাক্সিটা পেয়ে যেতে নিজেকে একটু ভাগ্যবান মনে করলাম ।
সারাদিন কাজ করে বেশ ক্লান্ত,
তাই ট্যাক্সিতে উঠে ড্রাইভারকে গন্তব্যস্থল
জানিয়ে সিটে শরীরটা এলিয়ে দিলাম । অনেক রাত হয়ে গেছে, বাড়িতে সবাই চিন্তা
করবে এই ভাবতে ভাবতে কখন চোখের কোনে ঘুম চলে এলো । জানিনা কতক্ষণ ঘুমিয়ে
ছিলাম, হঠাৎ কি একটা
আওয়াজে আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো । একটু তাকিয়ে দেখলাম
সবদিক, তারপর
ড্রাইভারের সিটের পেছনে লেখা ট্যাক্সির নম্বরটা চোখে পড়তেই
আমি চমকে উঠলাম । ভারী বিদঘুটে নাম্বার, চারটে শূণ্য ।
তার
ঠিকপরেই লেখা আছে ‘পথের শেষ নেই’ । আমি খুব
অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম,
তার সাথে ট্যাক্সিটিও প্রচন্ড গতিতে এগিয়ে চলেছে ।
কোথায় যে থামবে জানি না । বেশ ভয় পেয়ে গেলাম আর ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করতে
যাব কি, দেখলাম
ড্রাইভারের সিটে
কেউ নেই । আতঙ্কে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চোখ বুজে
চেল্লাতে লাগলাম ।
চোখ
খুলতেই দেখি আমার সামনে বাবা, মা, বোন, ভাই দাঁড়িয়ে
আছে । মা আমাকে
জিজ্ঞসা করলেন, ‘কি হয়েছে
সন্তু, ঘুমের ঘোরে
চেল্লাচ্ছিস কেন ?
কি হয়েছে তোর ?”… আমি সবার দিকে
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ,
তারপর পাশ ফিরে আবার ঘুমিয়ে
পড়লাম ।
No comments:
Post a Comment