অণুগল্প-
অবাস্তব
মহেশ্বর সব সময় সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত
থাকে।
ফেসবুক,
হোয়াটসঅ্যাপ এগুলি
একদিন
ব্যবহার না করলে
তার
ঘুম
হয়
না।
মহেশ্বরকে সবাই
মহেশ
বলে
ডাকে;
মহেশ
কালনা
কলেজে
ইতিহাস
নিয়ে
অনার্স
পড়ছে।
লম্বা
চওড়া
সুদর্শন যুবক।
তার
কোন
নেশাটেশা নেই,
তবে
ওর
বন্ধুরা ওকে
বলে
যে
ও নাকি সবথেকে বড়
নেশায়
নেশাগ্রস্ত , যেটা
সোস্যাল মিডিয়া নামে
পরিচিত। মহেশ
প্রেম
টেমও
করে
না
করার
সময়
কই
তার,
পড়াশোনা করে
যেটুকু
সময়
সে
পায়
তা
মোবাইলে চলে
যায়।
মহেশের
ফেসবুক
ফ্রেন্ড লিস্টে
অনেক
ফিমেল
ফ্রেন্ডও ছিল।সে
কিছু
দিন
থেকে
লক্ষ্য
করছে
যে
বর্ণালী মুর্মু
নামে
একটি
মেয়ে
ওর
সব
ছবিতে
লাইক
কমেন্ট
করছে।
তাই
সে
মেয়েটির সাথে
ম্যাসেন্জারে কথা বলতে শুরু
করল,
মেয়েটিও উত্তর
দিত;
এই
ভাবে
ধীরে
ধীরে
তাদের
মধ্যে
একটা
অন্য সম্পর্ক তৈরি
হতে
লাগল।
মহেশ
তার
সব
কিছু
বর্ণালীকে বলত,
তার
ভাল
লাগা
খারাপ
লাগা
সে
সারা
দিন
কী
করল
না
করল
এই
সমস্ত
কথা
সে
শেয়ার
করত
।
মহেশ একদিন বর্ণালী কে
তার
ছবি
পাঠাতে
বলল।
কারন
বর্ণালীর ফেসবুক
পেজে
তার
কোনো
ফোটো
ছিল
না।
কিন্তু
সে
তার
ছবি
না
দিয়ে
বলে
'তোমার
সাথে
সামনাসামনি দেখা
করব,'
তাই
মহেশ
আর
দ্বিতীয় বার
ছবি
চাইল
না।
সময়
যত
গড়াতে
লাগলো
ওদের
সম্পর্ক আরো
গভীর
হতে
লাগল।
মহেশ
একদিন
হঠাৎ
করেই
বর্ণালী কে
বলল
"কাল
তোমার
সাথে
দেখা
করতে
যেতে
চাই।"
বর্ণালী বলল
"ঠিক
আছে
এসো।"
মহেশের
বাড়ি
মিস্ত্রি পাড়ায় যা
পান্ডুয়া থেকে
১৫
কিমি
উত্তর
পূর্বে
অবস্থিত।আর বর্ণালীর বাড়ি
আসানসোলের সুভাষ
পল্লীতে। মহেশ
প্রথমে
সুন্দর
দেখে
ফুলের
তোড়া
কিনল
একটা,
তারপর
আঙ্গারসন মোড়
থেকে
বাস
ধরে
পান্ডুয়া গেল,
সেখান
থেকে
ট্রেনে
করে
আসানসোল পৌঁছল
সে।
বর্ণালী মহেশকে
শিব
মন্দিরের কাছে
দেখা
করতে
বলেছিল
কিন্তু
সে
নিজেই
সেখানে
অনুপস্থিত ছিল
তাই
মহেশ
ম্যাসেজ করে কারণ
জানতে
চাইলে
বর্ণালী জানায়
সে
বিশেষ
কারণে
যেতে
পারছে
না
ওখানে
মহেশ
যেন
বাড়ি
ফিরে
যায়।
কিন্তু
মহেশ
আজ
দেখা
করবে
বলে
জেদ
ধরেছে,
সে
বর্ণালী কে
কিছু
না
বলে
সুভাষ
পল্লীতে চলে
আসে
এবং
একটা
চায়ের
দোকানে
গিয়ে
জিজ্ঞাসা করল
" কাকু
বর্ণালীদের বাড়ি
কোনটা
বলবেন?"
চা
ওয়ালা
চমকে
উঠলো
দেখে
মহেশ
আবার
জিজ্ঞেস করল
"বর্ণালী মুর্মু
যে
বর্ধমান ইউনিভার্সিটিতে পড়ে
তার
কথা
বলছি
আপনি
চেনেন
তাকে।"
কিছুক্ষণ নির্বাক থেকে
চা
ওয়ালা
বলল
" তুমি
ওকে
কীভাবে
চিনতে।"
মহেশ
বলল
" চিনতে
মানে
ও আজ আমাকে এখানে
আসতে
বলেছে
তাই
এসেছি,
আপনি
শুধু
ওর
বাড়িটা দেখিয়ে দিন।"
চা
ওয়ালা
আরও
কিছুক্ষণ চুপ
থেকে
বলল
"একটু
বোসো
তোমাকে
একটা
গল্প
শোনাই,"
এই
বলে
সে
বলতে
শুরু
করল-"
এখানে
একটি
মেয়ে
ছিল
যে
পড়াশোনায় খুব
ভালো
ছিল।
তবে
সোস্যাল নেটওয়ার্কের প্রতি
সে
খুব
আসক্ত
ছিল,
একদিন
সে
কলেজ
থেকে
ফেরার
সময়
স্টেশনের কাছে
রেললাইন ধরে
হাঁটছিল, তার
হাতে
স্মার্টফোন ছিল
আর
কানে
ছিল
হেডফোন
ফলে
পিছন
থেকে
আসা
ট্রেনের হুইসেল
সে
শুনতে
পায়নি,
ব্যাস এক মুহুর্তে সব
শেষ।"এই বলে চা
ওয়ালা
একটা
দীর্ঘশ্বাস ফেলল,
মহেশ
বলল
"আমাকে
এসব
শোনাচ্ছেন কেন।"
চা
ওয়ালা
বলল
"সেই
মেয়েটি আর
কেউ
নয়
সে
বর্ণালী ছিল।"
মহেশ
এই
কথা
শুনে
চমকে
উঠলো,
সঙ্গে
সঙ্গে
ফেসবুক
খুলে
দেখল,
না
তার
ফেসবুক
ফ্রেন্ডদের মধ্যে
বর্ণালী বলে
কেউ
নেই।
ম্যাসেনঞ্জার খুলেও একই জিনিস
দেখে
সে।তার
বর্ণালী বিবর্ণ
হয়ে
গেছে।
মহেশ
চা
দোকান
থেকে
উঠে
আস্তে
আস্তে
স্টেশনে এল
কিছুক্ষণ পর
ট্রেন
এল,
তাতে
উঠে
সে
ভাবতে
লাগলো
বর্ণালী যদি
মারা
গিয়ে
থাকে
তবে
এতদিন
যে
তার
সাথে
চ্যাট করছিল সে
কে?
আর
ম্যাসেজ গুলিই বা
ডিলিট
হল
কীভাবে?
না
তার
সঠিক
উত্তর
সে
পেলনা।
এই
ঘটনার
কয়েকদিন পর
থেকে
দেখা
গেল
মহেশ
আর
আগের
মতো
সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকে না।
অবসর
সময়ে
বন্ধুদের সঙ্গে
গল্প
করে
খেলা
করে।
তবে
সে
মাঝে
মাঝে
এখনো
ভাবে
তার
বর্ণালীর সাথে
কথা
বলাটা
কি
পুরোপুরি অবাস্তব ছিল।
No comments:
Post a Comment