বড়গল্প -
নতুন
ফ্ল্যাট
প্রায় অর্ধেক দামে অফিসের কাছেই ফ্ল্যাট পাওয়া যাবে শুনে অনিন্দ্য দেরি করেনি ।
অফিস থেকে লাঞ্চ ব্রেকে একাই চলে গিয়েছিল ।
মালকিন ভদ্রমহিলা চণ্ডীগড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে স্থায়ী ভাবে
থাকবেন ।
ফ্ল্যাট বিক্রি হলেই ফ্লাইটের টিকিট পাঠাবে জামাই ।
একমাত্র পিছুটান এই ফ্ল্যাট ।
অনলাইনে পঁচিশ হাজার টাকা পাঠিয়ে তড়িঘড়ি বুকিংটা সেরে ফেলেছিল । শ্রেয়াকে সামনের রবিবার এনে চমকে দেবে ।
পূর্ব দিকে একটা পার্ক আছে ।
ওদিকটায় কোনোদিন বাড়ি উঠবেনা । আলো বাতাসের কোনো অভাব হবেনা । বারাসাতের ভাড়া বাড়িতে খুবই অসুবিধা হয় থাকতে । দুজনেরই অফিস দূরে তার উপর একতলার দুটো ঘরই স্যাঁতস্যাঁতে ।
রোদ ঢোকেই না ।
চারপাশে বড়বড় বাড়ি ।
বাড়ির মালিক ও তাঁর স্ত্রী অবশ্য বেশ ভালো মানুষ ।
ওদের খোঁজ খবর নেন । সুবিধা অসুবিধায় পাশে থাকেন ।
কিন্তু এখানে অনেক আরামে থাকা যাবে ।
রবিবার দুপুরে খেয়ে দেয়ে শ্রেয়াকে সারপ্রাইজ দিতে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে অনিন্দ্য । মালকিন মিসেস সরকার দরজা খুলে দেন ।
শ্রেয়া প্রথমে ফ্ল্যাট এবং আশেপাশের খোলা জমি চওড়া রাস্তা পার্ক সবদেখে খুব খুশি হয় । পরে যখন বুঝতে পারে অনিন্দ্য তাকে না দেখিয়েই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট টা বুক করে দিয়েছে তখন সে একটু রেগেই যায় ।
অনিন্দ্য সব কাজে তাড়াহুড়ো করে শেষে ছড়িয়ে ফেলে ।
―“এত ভালো জায়গায় ফ্ল্যাট
..এত কমদামে ছাড়ছেন কেন মিসেস সরকার
? ” ক্যাব এ
উঠেই শ্রেয়ার প্রশ্ন ।
―“ সবটাতে এত গোয়েন্দাগিরি করবি না তো । সেকেন্ড হ্যান্ড সব জিনিসই কম দামে বিক্রি হয় সেটা মাথায় রাখিস । " বলে অনিন্দ্য ।
যদিও সে জানে শ্রেয়ার কথার যুক্তি আছে ।
দামটা সত্যি ভীষণই কম । জলের দরে ফ্ল্যাটটা ছেড়ে দিচ্ছেন মিসেস সরকার ।
―“ হম্মমম ।
সেটা ঠিকই বলেছিস কিন্তু মনে হচ্ছে আর একটু খোঁজ নিলে পারতিস ।
একটা জিনিস খেয়াল করেছিস
? ফ্লোরের অন্য ফ্ল্যাট টাতে কেউ থাকেনা
? " ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে শ্রেয়া ।
―“ হ্যাঁ আমি দেখেছি বাইরে তালা ।
আগের দিন ও তাই ছিল ।
হয়ত ওখানকার বাসিন্দারা বেড়াতে গেছে কোথাও । " হালকা স্বরে জানায় অনিন্দ্য ।
―“ উঁহু ।
আমি দেখেছি কোলাপসিবলের মাঝখানে নিচের দিকে মাকড়শার জাল । ওখানে অনেক দিন কেউ ঢোকেনি । ”
―“আশ্চর্য ! সবটাতে বাগড়া দেওয়া তোর স্বভাব হয়ে গেছে । যা ওটা ক্যানসেল করে দিচ্ছি । কোথায় উল্টোদিকে মাকড়শার জাল হয়েছে তোর চোখেই পড়ে ।
দুত্তোর ..। " অনিন্দ্য ফোন হাতে নিয়ে নম্বর ডায়াল করতে যায় ।
―“ বাজে বকিস না ।
কাকে ফোন করছিস ? অদ্ভুত তো ! লাখ লাখ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনছি ঠিকঠাক খোঁজ নিয়েছিস কিনা জানবো না ! ঠিক আছে পরে কোনো ঝামেলা হলে আমি তোর পাশে নেই ।
আমাকে কত দিতে হবে বলে দে । কাল চেকে সই করে দেব টাকা তুলে নিস ।
" শ্রেয়া জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় । ছুটির দিন কোনো ঝামেলা করতে তার বিরক্ত লাগে ।
অনিন্দ্যর বাবা বেশ কিছু টাকা ছেলেকে পাঠিয়ে দিলেন ।
দুজনেরই চার পাঁচ বছরের চাকরি ।
কুড়িয়ে কাঁচিয়ে টাকা জোগাড় করে বাকিটা ধার নিয়ে মিসেস সরকারের টাকা মিটিয়ে দিলো ।
ভদ্রমহিলা যাওয়ার আগে একদিন ওদের দুজনকে ডিনারে ডাকলেন ।
―“ আমার বড় সাধের ফ্ল্যাট এটা ।
আমাদের সুখের নীড় ।
তোমাদের আঙ্কেল বছরখানেক আগে হঠাৎ আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন ।
ঘুমের মধ্যেই
..। আমি এই জায়গা এত স্মৃতি ছেড়ে মেয়ের কাছে যেতে চাইনি ।
কিন্তু এবারের দেওয়ালীতে মেয়ে এসে জিদ ধরে বসলো আমাকে কিছুতেই এখানে একা থাকতে দেবে না ।
আমিও ভেবে দেখলাম আমারও প্রায় ষাট বছর হতে চললো একা অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে কাউকে ডাকতেও পারবোনা ।
তাই চলে যাচ্ছি ।
.. আমার একটা অনুরোধ তোমাদের রাখতেই হবে । পূবের ব্যালকনির ইজিচেয়ারটা আর টব শুদ্ধু বাহারি গাছগুলো যেখানে যেমন আছে রেখে যাবো । এই ঘরের বেলজিয়াম গ্লাসের আয়না বসানো কাঠের আলমারি টাও বিক্রি করবোনা । এগুলো রইলো ।
তোমরা না কোরোনা প্লিস । আর দক্ষিণের ব্যালকনিতে একটা ঝোলানো বেতের দোলনা চেয়ার আছে । ওটা তোমরা ব্যবহার করলে আমি শান্তি পাবো ।"
চিকেন আর রুমালী রুটি দুটোই মিসেস সরকার দারুন বানিয়েছেন । তার উপর কিছু সৌখিন পুরোনো দিনের কিছু জিনিস , রং করা মাটির পাত্রে এতগুলো সতেজ গাছ তিনি বাড়তি উপহার হিসেবে দিচ্ছেন দেখে দুজনেই মনে মনে খুশি হলো ।
মাস
দেড়েক বাদে মনের মত অয়েল পেন্ট করে ,আধুনিক
গৃহসজ্জা সেরে
গৃহপ্রবেশ করে সুখী দম্পতি । এখানে একটাই অসুবিধা যে যার সে তার মতো বাঁচে । কেউ কারো সাথে বিশেষ মেশে টেসে না । বাকি ফ্লোরের ফ্ল্যাট গুলোতে মিষ্টির বাক্স দিয়ে এসেছে দুজনে সবাই কেমন নিরুত্তাপ ভাবে মিষ্টি নিল দরজা বন্ধ করে দিলো । কোনো আবাহন বিসর্জনের রীতি না মানুক অন্তত ভদ্রতা করে নাম জিজ্ঞাসা করতে পারতো কিন্তু সবাই যেন ওদের এড়াতে পারলে বাঁচে ।
একটু খারাপ লাগে দুজনেরই ।
সবাই চলে যাওয়ার পর শ্রেয়াকে সিল্কের লাল টুকটুকে নতুন গাউনটা দিয়ে ঠেলে স্নানে পাঠায় অনিন্দ্য । আগে থেকে কিনে এনে লুকিয়ে রাখা সুগন্ধ যুক্ত রঙিন মোমবাতি গুলো বার করে এদিকে ওদিকে সাজিয়ে জ্বেলে দেয় ।
গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দেয় খাটে ।
আজ নতুন বাড়িতে তার সবকিছুই ভীষণ নতুন নতুন মনে হচ্ছে । বিদেশি পারফিউম এর নিবিড় পুরুষালি
হাতছানি স্প্রে করে নেয় সারা শরীরে ।
দুজনের
ফোন সুইচ অফ করে রেখে আসে ড্রয়িং রুমের সেন্টার টেবিলে । দুটো বড় মোমবাতি দেশলাই আর টর্চ মিসেস সরকারের দেওয়া আলমারিতে গুছিয়ে রাখে ।
এদিকে পাওয়ার কাট হয়না বললেই চলে । তবু সব গুছিয়ে রাখাই ভালো । এরপর ঘরে ঢুকে অপেক্ষা করে শ্রেয়ার জন্য । আর স্বপ্ন দেখে
..
দরজা খুলে ঢুকে শ্রেয়া খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় ।
অনিন্দ্য যতটা স্বপ্ন দেখেছিল তার থেকে অনেক বেশি জীবন্ত প্রাণোচ্ছল শ্রেয়াকে পেয়ে আবেগে ভেসে যায় সে
..।
―“ একি ! ব্যালকনি তে কে
? " ―সুর তাল কেটে আঁতকে ওঠে শ্রেয়া ।
―“ কোথায় ? ধুর ব্যালকনি তে কে থাকবে
?” অনিন্দ্য এত রোমান্টিক সময়ে অন্য কিছু ভাবতে রাজি নয় ।
―“ দূর বাবা
! ছাড় না । নির্ঘাৎ চোর এসেছে । পরিষ্কার দেখলাম একজন জানালার কাঁচের ওপারে হেঁটে গেল ।
” ফিসফিস করে বলে শ্রেয়া ।
―“উফ্ফ কি বেরসিক চোর রে বাবা । দাঁড়া দেখে আসি । ” বিরক্ত অনিন্দ্য একটা লাঠি খোঁজে । আগেকার দিনে দরজায় খিল থাকলো । খুব বৈজ্ঞানিক সুরক্ষা পদ্ধতি ।
একঘা দিলে চোর শেষ । এখন ফ্ল্যাটে কিছু নেই যা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে আত্মরক্ষাটা করা যায় । কিচ্ছু না পেয়ে পর্দা খুলে পর্দা ঝোলানোর স্টিলের রড টা হাতে নিয়ে একটু সাহস পায় অনিন্দ্য ।
চোর আসলেও সে খালি হাতে এসেছে এরকম কোনো গ্যারান্টি কেউ দেয় নি । শ্রেয়া ততক্ষণে উঠে হাউসকোট পড়ে নিয়েছে ।
ব্যালকনির দরজাটা শব্দ না করে খুলে ফেলে অনিন্দ্য ।
শ্রেয়াকে ইশারা করে ব্যালকনির আলোটা জ্বালিয়ে দিতে ।
শ্রেয়া সুইচ টেপে কিন্তু বাইরে আলো জ্বলে না । শ্রেয়া বাকি সুইচ গুলো টেপে কিন্তু দুজনেই অবাক হয়ে দেখে কোনো আলোই জ্বলছে না ।
পার্কের গেটে আলো জ্বলছে । তাই দরজা খুললে আবছা ভাবে সবই দেখা যাবে ।
শ্রেয়া হাতে একটা জলভরা বোতল নিয়ে নেয় ছুঁড়ে মেরে চোরটাকে ঘায়েল তো করা যাবে ।
একটানে দরজা খুলে বাইরে প্রায় লাফিয়ে বার হয় দুজনে । একঝলক অতি ঠান্ডা হওয়া শুঁটকি মাছের মতো দুর্গন্ধ বয়ে আনে দুজনের নাকে ।
ব্যালকনিটি ফুট পনেরো হবে । একদম শেষ মাথায় আবছা আলো আঁধারিতে ইজিচেয়ারে একজন বয়স্ক মানুষ বসে আছেন ।
পরনে সাদা ধুতি আর ফতুয়া ।
হাতে একটি ভর দিয়ে চলার লাঠি । মানুষটির চোখে মুখে রাগের অভিব্যক্তি ।
―“ ও মাগো
! ” ভয়ে অনিন্দ্যর হাত চেপে ধরে শ্রেয়া । অনিন্দ্য র হাত থেকে স্টিলের রড টা মাটিতে পড়ে যায় সশব্দে ।
―“ এটা আমার বাড়ি ।
কেন এসেছো তোমরা ...চলে যাও ..” বহুদূর থেকে একটা দমবন্ধ আর্তনাদের মতো ভেসে আসে কিছু শব্দ ।
পরক্ষণেই সেই আবছায়া মূর্তি
লাঠিটি সজোরে ছুঁড়ে মারেন ওদের দিকে ।
অনিন্দ্যকে
শ্রেয়া সজোরে টেনে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে না নিলে ওর মাথাটা আজ ফেটে যেত ।
ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দেয় শ্রেয়া ।
দুজনে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে ভয়ে । গলা শুকিয়ে কাঠ । চেষ্টা করেও কোনো চিৎকার বার হয়না শ্রেয়ার । দুমদাম করে দরজাতে বাইরে থেকে ধাক্কা পড়তে থাকে ।
বেশিরভাগ মোমবাতি নিভে গেছে । একটা কোনোমতে জ্বলছে । অসম্ভব আতঙ্ক ফুটে ওঠে অনিন্দ্য র মুখে । সেও কথা বলার ক্ষমতা হারিয়েছে ।
―“মোমবাতি আর আছে ? ফোন কোথায় ? " ফিসফিস করে বলে শ্রেয়া ।
অনিন্দ্য ঘাড় নেড়ে ড্রয়িং রুমের দিকে ইশারা করে । দরজায় ধাক্কা বন্ধ হয়েছে ।
দুজনে হাত ধরাধরি করে ড্রয়িরুমে ঢোকে । রাস্তার আলো জানালার কাঁচের মধ্যে দিয়ে যেটুকু ঢুকছে তাতে অস্পষ্ট ভাবে সবকিছুই দেখা যাচ্ছে ।
একদৌড়ে শ্রেয়া নিজের ফোনটা তুলে নেয় । সুইচ অন করে টর্চটা জ্বেলে নিয়ে অনিন্দ্য কে ইশারা করে ।
অনিন্দ্য কাঁপা হাতে এক পাল্লায় আয়না লাগানো আলমারির অন্য পাল্লাটা খুলে ফেলে । শ্রেয়া সামনে গিয়ে টর্চের আলো ফেলে অনিন্দ্য কে দেখতে সাহায্য করে । হঠাৎ তার চোখ পড়ে আয়নার দিকে ।
পিছনের জমাট অন্ধকার থেকে তার পিছনে এসে দাঁড়ায় সেই ভয়ঙ্কর রাগী মূর্তিটি । তার জ্বলন্ত চোখে প্রচন্ড আক্রোশ আর ঠোঁটে বিশ্রী কুটিল হাসি ।
অনিন্দ্য হাতে মোমবাতি নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখে মাত্রাছাড়া ভয়ে শ্রেয়া সাদা হয়ে গেছে আর তার পিছনেই ভয়াল ক্রুর এক বৃদ্ধ দাঁড়ানো যার বাকি শরীরটা তাল তাল অন্ধকারে ঢাকা । শ্রেয়া জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায় । নৃশংস এক হাসি হেসে ওঠে সেই ভয়াল মূর্তি ।
জ্ঞান হারায়
অনিন্দ্য ...
শ্রেয়ার ফোন বেজে ওঠে ।
ওর মা অনেক্ষনের চেষ্টায় লাইনটা পান । ফোন ধরার পর তিনি অনুযোগ করে বলেন
―“ কি রে
! সুইচ অফ করে রেখেছিস কেন দুজনে
! শোন চিন্তা করিস না । আমরা এখনো বাড়ি পৌঁছাতে পারিনি । সামনে কোথায় একটা বাস খারাপ হয়ে গেছে ব্যাস সারা রাস্তা জুড়ে জ্যাম ।
তোর বাবা ড্রাইভার সবাই রাস্তায় নেমে হাঁটছে ।
ভালো লাগে বলতো ? কত গাড়ি পাশের গলি গুলোতে ঢুকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে । আমাদের তো মধ্যমগ্রাম যাওয়ার আর রাস্তা নেই মনে হয় । অনিন্দ্য কে জিজ্ঞাসা করে দেখতো । শুনছিস
? কিরে সোনাই কোনো উত্তর দিছিস না কেন ! কি হলো ! সোনাই
? এই শ্রেয়া কি হোলো কথা বলছিস না কেন
? ”
―“ ওরা তো মাটিতে পড়ে আছে ।
শ্রেয়ার মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে
..হা হা হা ।
" একটা ঘ্যাস ঘ্যাসে গলার আওয়াজ পান শ্রেয়ার মা ।
―“ ওমা ! সেকি
! এই শুনছো শিগগিরি এদিকে এসো ..” স্ত্রী র আচমকা আর্তনাদে ছুটে আসেন শ্রেয়ার বাবা ।
ড্রাইভার ও
ছুটে আসে । শ্রেয়ার মায়ের মুখ থেকে অদ্ভুত কথা শুনে ফোন হাতে নিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করেন
―“ হ্যালো !আপনি কে বলছেন ! "
―“ আমি বিকাশ সরকার ।
আমার ফ্ল্যাট এর মেঝেতে ওরা গড়াগড়ি খাচ্ছে ।এখানে
আমি কাউকে থাকতে দেব না ।
মেরে ফেলবো
..শেষ করে ফেলবো .. ।
" ফোন কেটে যায় ।
―“কি সর্বনাশ
! এই গাড়ি ঘোরাও ।
আমি এখুনি বিধাননগর থানায় ফোন করছি । কুণাল আছে ওখানে । এখুনি পুলিশের সাহায্য দরকার ।
এতো খুন করার হুমকি দিচ্ছে ।
" ফোন ঘেঁটে বন্ধুর ছেলে কুণালের নম্বর বার করেন শ্রেয়ার বাবা ।
পরদিন শ্রেয়ার বাপের বাড়িতে আসেন কুণালের বাবা অসিত বাবু । বেশি ডোজের ঘুমের ওষুধ দিয়ে শ্রেয়া এবং অনিন্দ্য কে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে । তিনি বলেন ―“ পুরোটাই বড় অদ্ভুত ঘটনা রে বাবলা ।
কুণাল রা পুলিশি তদন্ত করছে ।
ওরা তোর ফোন পেয়ে দশ মিনিটের ভিতরেই ফ্ল্যাটে পৌঁছে যায় । দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল ।ভেঙে ঢোকে পুলিশ ।
ওদের হাসপাতালে পাঠিয়ে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে ফ্ল্যাটের আগের মালিক বিকাশ সরকার ভীষণ বাজে লোক ছিল ।
গোঁয়ার এবং অসভ্য প্রকৃতির । কেউ ওনাদের সাথে সম্পর্ক রাখতো না ।
পাড়ার নাইট গার্ড একদিন বারান্দার ইজিচেয়ারে বা দোলনায় ওনার আবছায়া মূর্তি দেখে ভয় পেয়েছে । শ্রেয়াদের আরো খোঁজ খবর নিয়ে ফ্ল্যাট টা কেনা উচিৎ ছিল ।
পুলিশ তদন্ত করবে কিন্তু জেনে রাখ কিস্যু বের হবে না । বৌদি ওদের ওই ফ্ল্যাটে আর যেতে দেবেন না ।
"
―“ না না । আমি মরে গেলেও আর ওদের ওখানে যেতে দেবনা ।
মা গো আমার একটাই সন্তান ।
ওরা বেঁচে থাক ।
ঠাকুর রক্ষা করেছেন ।
" দুহাত কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম করেন শ্রেয়ার মা ।
―“আর হ্যাঁ শ্রেয়ার ফোনে আপনার গোটা ছয়েক মিসড কল পেয়েছে ওরা কিন্তু কোনো ফোন রিসিভ করা হয়নি ..বাবলা
, তোদের সাথে বিকাশ সরকারের প্রেতাত্মার ই
কথা হয়েছে
..।" বলেন
অসিত বাবু ।
সারা
ঘরজুড়ে যেন একঝাঁক শীতল নীরবতা নেমে আসে ।।
No comments:
Post a Comment