Monday, February 18, 2019

সপ্তাশ্ব ভৌমিক




অনুবাদ কবিতা - 
প্রেমেই পূর্ণতা

প্রেমেই জেনেছি পরিপূর্ণতা ; যদিও  বিশ্বে চলছেই ক্ষয়,
বৃক্ষের মুখে নেই কোনও কথা তবুও সময় অভিযোগময়।
যদিও আকাশ এতই গভীর- ফ্যাকাসে দৃষ্টি দেখতে পায় না
স্বর্ণ পাত্র আর শতদল, কি অপরূপ! - তুলনা হয় না।
যদিও পাহাড় ধরে রাখে ছায়া এবং সাগর গাঢ় বিস্ময়
বহমান দিন যেন ঢেকে দেয় অতীত দিনের সব সঞ্চয়।
এসব জেনেও কাঁপে না তো হাত – পদক্ষেপেও নেই কোনও চ্যুতি
ধু-ধু শূন্যতা ক্লান্ত করে না, ভয়ের গুহায় নেই বিচ্যুতি
ভালোবাসা মাখা চোখ আর ঠোঁট যদি একবার  দেয় সম্মতি।
==================================================
Love is enough
William Morris.

LOVE is enough: though the World be a-waning,
And the woods have no voice but the voice of complaining,
Though the sky be too dark for dim eyes to discover
The gold-cups and daisies fair blooming thereunder,
Though the hills be held shadows, and the sea a dark wonder,         
And this day draw a veil over all deeds pass'd over,
Yet their hands shall not tremble, their feet shall not falter;
The void shall not weary, the fear shall not alter
These lips and these eyes of the loved and the lover.


আর্যতীর্থ



কবিতা –
ভ্যালেনটাইন ডে

এই বারুদের দিনে তোমায় দেবোনা কোনো রক্তগোলাপ,
লাল বড়  সহজলভ্য রঙ, খবরের কাগজের পাতায় পাতায়,
তোমায় নেবো না কোনো মোমবাতি আলোকিত রাতরেঁস্তোরায়,
মোমবাতি জেনে গেছে পৃথিবীর অগণিত পাপ।
দুজনে একলা হলে ছাতে নিয়ে গিয়ে, তোমাকে চেনাতাম লুব্ধক,
দেখাতাম অরুন্ধতী সপ্তর্ষিমণ্ডলের কত কাছাকাছি থাকে,
এক আকাশ ভরা তারা বলো আর কিভাবে দিই তোমাকে,
পাঁচ কোটি উদ্বাস্তু ওদের যে রোজ দেখে বাধ্যবাধক।
ফেলে দেওয়া পিৎজার টুকরোতে লেগে আছে সিরিয়ান বালকের খিদে,
কিনলের বোতলের তলানিতে রাজস্থানী বালিকার ঘাম মনে পড়ে,
আজও প্রেম  বিলাসিতা পৃথিবীর কোটি কোটি ঘরে,
কি দেবো তোমায় বলো, উপহার কি দেবো আজ, প্রেমের  তাগিদে?

আর্যতীর্থ



কবিতা –
সদুপদেশ

প্রেম নিয়ে মেতে আছে দেখি সারা বিশ্ব
বাকি সব থোড়বড়ি কোথায় অদৃশ্য।

ফরওয়ার্ড হচ্ছেন আশুতোষ ভটচাজ
( জানি তিনি চুমু নিয়ে অভিধানী বটগাছ)

দেখে শুনে খেপে গেছে সেলফি ও আয়না
শুধু এক চুমুটাই ওর সাথে যায়না।

ইমোজিরা খুব খুশি, নাচে ধেই ধিনতা
লাভ ইউ যায় কি বলা হার্টসাইন বিন তা?

আমি বলি love হলো লোকসানী সওদা
প্রেম করে সুখ কার দেখি ভেবে কও তা

লায়লা মজনু আর জুলিয়েট রোমিও,
শেষে গিয়ে কি যে হাল, দেখে ভাব জমিও

তবুও অবাধ্য মন বারণ কি শুনবে,
কটা চুমু ফ্রী পেলো প্রেমে সেটা গুনবে।

বলে দিই ,ফ্রী নয়, চুমুরা মহার্ঘ,
নিজে থেকে চেয়ে নেওয়া বংশের ঝাড় গো।

যিনি দেন চুমু ঠোঁটে, তিনি হন মালকিন,
হাতজোড় করে রেখো, পরে যত গাল দিন।

বস্তুত বলে দেওয়া ওহে তুমি আমারই,
নতজানু হয়ে থেকো, যত কেন ঘা মারি।

রিলেশনশিপ মানে বোঝো কি হে বৎস?
তোমার সাগরপ্রেমে উনি একা মৎস্য।

ভুলেও কদাপি চোখ ডান বাম দেখলে,
নরকের অগ্নিতে ভাগ্যকে সেঁকলে।

গালাগাল তো খাবেই, সাথে মার পাওনা
( ‘ অত যদি ঝারি মারো, ওরই সাথে যাওনা!’)

যতোই মিনতি করো , দেখছিনা তোমা বই,
রাগ হলে প্রিয়তমা কিছু নন বোমা বই

যাবতীয় দোষত্রুটি, মনে রেখে দিন তার,
ফেঁড়ে দেবে, ফুঁড়ে দেবে সে বোমার স্প্লিনটার।

কবে ফুল ভুলেছিলে, লেট ছিলে আসতে,
ইজ্জত ফালা করে তারিখের  কাস্তে।

এত সব জেনেবুঝে তবু যদি এগোবে,
আমাকে ডেকোনা বাপু, স্রোতে যেই বেগ হবে।

ভেসে যাবে জেনে যদি দেয় জলে ঝাঁপ কেউ,
চেঁচানো বারণ তার যদি আসে বড় ঢেউ।

আরো কিছু বলতাম, আপাতত থাক সে
কারণ রয়েছে কাজ, মালকিন ডাকছে।

ধীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী



কবিতা -
তোর .........

তোর     বাগানেতে অনেক ফুলের মেলা,
তোর     তাদের ওপর চরম অবহেলা  
তোর     মেজাজটা যে বড্ড উড়োনচন্ডী,
তোর     নিজের ঘরেই কাটিস সীতার গন্ডী
তোর    ঘরের ভেতর আরেকখানা ঘর,
তোর    মন বলেছে, ভীষন স্বার্থপর
তোর    বেরিয়ে যাওয়া, হঠাৎ নিশির ডাকে,
তোর     সত্বা আছে খামখেয়ালীর ফাঁকে
তোর     লেখায় আছে প্রেমের আবেদন,
তোর     অহংকারের শুধুই আস্ফালন
তোর     আকাশটা আজ ভীষন বেসামাল,
তোর     গানের ভেতর হঠাৎ কাটে তাল
তোর     ছন্নছাড়া জীবন-উৎসব,
তোর     ডালেতে নেই নতুন পল্লব
তোর     ঘরকন্নার কাজেতে খুব ফাঁকি,
তোর     মন্ডপেতে বাজায় না আর ঢাকি
তোর     দু চোখেতে, দু রকমের ভাষা,
তোর     শূণ্য খাতায় অশেষ প্রত্যাশা
তোর     আকাশটাকে ভীষন চেনা দায়,
তোর     নিষেধ মেনে কেবল রঙ পাল্টায়
তোর     অনাহুত আহ্বানে নেই ঢেউ,
তোর     নদীর পাড়ে আর আসেনা কেউ
তোর     দেব-দেউলে সামবেদের ওই গান,
তোর     মনের ভেতর সুলুক সন্ধান  
তোর     অফিস যাবার নেই কোনো আজ তাড়া,
তোর      অনাঘ্রাত ফুলেতে নেই সাড়া
তোর      জীবনবোধের অভাব উপস্থিত,
তোর      নড়ে গেছে চার দেয়ালের ভিত
তোর     ধারনা নেই, তোর কি অবস্থান,
তোর     কণ্ঠেতে নেই সুরেলা সেই গান,
তোর     এত কিছু "নেই"এর মাঝেও স্রোত,
তোর     সঙ্গে তবু জড়িয়েছি ওতপ্রোত
তোর     অভিষেকে না থাক নহবত,
তোর     ভাবনা যাই হোক, সৎ বা অসৎ,
তোর     আলোর রাতে না থাক রোশনাই,
তোর    অনিচ্ছাতেও তবু তোকেই চাই