কবিতা -
স্বাধীনতার
মানে
“ই বাবু আইজ ইস্কুলমাইঠ্যে তুরা ভিড় করছিস ক্যান?
আইজ কি পূজা রে?”
ভিড়ের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসা টাক মাথা পঞ্চাশ,
চোয়াল ফাঁক করে হাসে- “পুজো নয়রে বোকা,
আজ যে স্বাধীনতা দিবস!”
“সাদিনতা-উটা কি ঠাকুর?
মানত কইরলে কতা শুনবেক?”
খেঁকিয়ে ওঠেন কেউকেটা ভদ্রলোক
“ওরে গাধা, স্বাধীনতা কোনো ঠাকুর নয় রে,
স্বাধীনতা হলো অন্যের অধীনতা থেকে মুক্তি পাওয়া
আর মুক্তির স্বাদ চেখে চেখে খাওয়া।
--আরে তুই বসে পড়লি কেন?”
“ওই যে,তু বইল্লি খাওয়ার কতা,
দে দিগিনি তিনদিন প্যাট ভইরে খাই নাই রে,
দে না খাইতে।
সাদিনতার খুব ভালো হইবেক। মঙ্গল হইবেক।”
“না রে, স্বাধীনতা আসলে তা নয়, তুই জানিস
সুভাষ বোস, গান্ধীজির কথা?
ওরা দেশের জন্য কত কিছু করেছেন।
ওরে গাধা, স্বাধীনতা হলো মুক্তি,
শৃঙ্খলমোচন।”
“অ--ইটা সাদিনতা!
ই যে তুরা ধুপ দিয়ে, ফুল দিয়ে
সাদিনতা করছিস-
ইর জয়ন্যই কি তুরা রোইজ খেইতে পাস?
মুদের পেইটে লাত মাইরলেও লিখাপরা বেরোবেক লাই।
মুর মা’টা ফুট কইরে মইরে গেল;
ডাক্তারে ছুঁলো না।
বিয়া হইলো না বইলে বুনটা--
গলায় দড়ি নিল।
ই বাবু, ইবার বল সাদিনতা কুনটা?”
চেঁচিয়ে ওঠেন পঞ্চাশ-- “ব্যাটা মূর্খ!
ওই যে রান্না হচ্ছে খিচুড়ি,
ওটাই স্বাধীনতা।
“অ উটা সাদিনতা? তা হইলে মুকে একটু বেশিই দে।
ভাই খাবেক, বাপটা খাবেক। আর তুরা
রোইজ সাদিনতা কর।
আমরা তাইলে রোইজ খেইতে পাবো।
স্বাধীনতা হাতে লাফিয়ে বাড়ি আসে মূর্খটা।
বাপকে বলে, “লে বাপ সাদিনতা খা,
খাইয়ে দ্যাক কি ভালো,
খা, খেয়ে লে।”
______________
সুজান মিঠি (সুজাতা মিশ্র), গ্রাম - ধাপধাড়া পোষ্ট - সোনারগড়িয়া থানা - জামালপুর
জেলা - পূর্ব বর্ধমান
পিন - ৭১৩৪০৪
এক অনবদ্য প্রকাশ কবি।অপূর্ব
ReplyDeleteধন্যবাদ
Delete