কবিতা -
পুরোনো সেই দিনগুলি
ছোট্ট ছিলাম যখন
ছোট্ট ছোট্ট মেঘগুলো সব
আসতো ভেসে তখন।
পক্ষীরাজের ঘোড়ায় ছোটা
তিরপুর্নির ঘাট,
রাজকন্যা কোথায় আছে
তেপান্তরের মাঠ!
জানতে খুবই ইচ্ছে করে
সন্ধ্যেবেলায় তাই,
জটলা করে বসে যেতাম
আমরা
ক'জন ভাই।
ঠাকুমার ফোকলা মুখে
' ঠাকুর মা'র ঝুলি,
হাজার মজার গল্প শোনা
সে সব কী
আর ভুলি!
ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমীর
যতো
গল্প শুনে
ঠাকুরমার আদর খেয়ে
কাটতো
সারাদিনে।
বোশেখ এলেই ধুম গরমে
নিঝুম
দুপুর বেলা
যেতাম ছুটে আম কুড়োতে
বাগানের আম তলা।
সে কী কালো আসতো করে
কাল
বোশেখীর ঝড়!
মুষল ধারে বৃষ্টি সাথে
বাজ
পড়ে কড়্ কড়্!
আমের তলা জামের তলা
কিম্বা টোপা কুলে,
টপটপাটপ চলতো মুখে
জলের থেকে তুলে।
দুপুর বেলা পুকুর পাড়ে
খেলনা পাতি যতো,
জড়ো করে ঘর বানাতাম
সত্যিকারের মতো।
গুলিডান্ডা,কুমিরডাঙা
কিছুই তো নেই বাদ,
রুমাল চুরি,ভোকাট্টা
চোর
পুলিশের সাথ।
কী ছিল না করতে বাকি
সবই
তো করতাম,
ছিপ ফেলতাম,তাল কুড়োতাম
সন্ধ্যেতে ফিরতাম।
রাতের বেলায় পড়বে কে আর
সারাদিনের ক্লান্তি,
ঘুমিয়ে যেতাম বেঘোর ঘোরে
সে
কী পরম শান্তি!
আষাঢ় মাসে বৃষ্টি যখন
পড়তো
অঝোর ঝরে,
মনে পড়ে দাপিয়ে পাড়া
বৃষ্টিতে স্নান করে
ফিরলে ঘরে মায়ের বকা,
বাবার বকা খুব।
তবুও ছোটা থামতো না তো
দিতাম জলে ডুব।
খিচুড়ির গন্ধে মম
সাথে বেগুন ভাজা,
বৃষ্টি দিনে ঘিয়ের সাথে
খেতে সে কী মজা!
হেমন্তেরও মজা ছিল
নবান্নের দিনে,
নতুন ধানের নতুন পায়েস
চলতো সারাদিনে।
সংক্রান্তির পিঠে পুলি
গ্রামের সারা পাড়া,
খুব ভোরেতে নদীতে
স্নান,
নতুন জামা পরা।
সন্ধ্যে থেকেই বাজিয়ে মাইক
যতো ছেলে মেয়ে,
জাগিয়ে পাড়া মাতিয়ে দিতো
টুসুর গান গেয়ে।
এইভাবেতে অবসরের
স্মৃতির পাতা খুলে,
আজ দেখি সব দাঁড়িয়ে আছে
অতীতটাকে ভুলে!
No comments:
Post a Comment