Monday, May 4, 2020

মুকুলিকা দাস



কবিতা -    

অতনু ভালো আছো?

অতনু ভালো আছো? আমি ভালো নেই জানো!
ভীষণরকম স্মৃতির জ্বরে পুড়ছে শরীরখানি,
অতনু, তুমি একবারটি ফিরবে না কি ঘরে?
তোমার জন্য সরিয়ে রেখেছি আমার খেলনা-বাটি!
অতনু ওরা বোঝেনা, ওরা মানেনা তুমি আছো-
ভীষণ রকম আমার কাছে, প্রথম সূর্যের জ্যোতি।
শুধু তোমার ছোঁয়াটুকুই আলেয়ারই আলো-
আমিও এক সর্বনাশী, রাধার মতোই ছুটি!

আলমারি হাতড়ে আমি তোমার গন্ধ খুঁজি,
কলারতোলা শার্টে আছে তোমার কটু ঘ্রাণ-
তোমার গন্ধে শরীর ভেজে, শান্ত হই রোজ,
কাঁপন ঠোঁটে তোমার আঙুল, শীতলতার স্নান।
খাবার টেবিল আজো আমার দুটো প্লেটেই সাজে,
বন্ধ চোখে দেখি তুমি খাচ্ছো গোগ্রাসে,
রান্নাঘরে আমার পিঠে তোমার আঁকিবুঁকি আর-
ঠোঁট ভিজে যায় তোমার ঠোঁটের আর্দ্র-সোদা ঘ্রাণে!
আমি চোখ খুলিনা, স্বপ্নটুকু উড়ে যাওয়ার ভয়ে-
আর তোমার প্রিয় আলুর দমে পড়তে থাকে মাছি-
আমি স্বপ্নে তোমার বিভোর থাকি পাগলিনীর মতোন
আঁচলখুলে রোদ্দুরটাও তোমার সাথেই মাখি!

তোমার ঘড়ি, তোমার টাই আর তোমার জুতোজোড়া -
বইয়ের তাকে রবীন্দ্রনাথ আর সেই গোলাপের চারা-
তোমার পেনের খোলামুখে শেষ লেখা মোর নাম,
নীল ডায়েরির সফেদ পাতায় হাসনুহেনা হতাম!
কেউ বোঝেনা স্মৃতির অসুখ মারণাত্মক হয়,
পুরনো দিন ঘুনপোকা আর নতুন দিনের ক্ষয়-
অতনু, তোমার দেয়া সিঁদুর মিলিয়ে দিলাম ঘাসে,
ধুয়ে গেলো শ্রাবণধারায় অকারণ উল্লাসে-
তোমার-আমার ঘরখানি আজ মৃত্যুপুরীর মতোন
পারলে ফিরো আমার, শেষ নিশ্বাসটুকুর আগে!

No comments:

Post a Comment